পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8ఏ9 রৰীজ-রচনাবলী দেখি তখনি দেখিতে পাই, সম্মুখে আমার এই তরঙ্গিত সমুদ্ৰ— এই প্রবাহিত বায়ু— এই প্রসারিত আলোক— বস্তু নহে, ইহা সমস্তই আনন্দ, সমস্তই লীলা, ইহার সমস্ত অর্থ একমাত্র তাঁহারই মধ্যে আছে ; তিনি এ কী দেখাইতেছেন, কী বলিতেছেন, আমি তাহার কীই বা জানি ! এই আকাশপ্লাবী আনন্দের সহস্রলক্ষ ধারা যেখানে এক মহাম্রোতে মিলিয়া আবার তাহারই এই হৃদয়ের মধ্যে ফিরিয়া যাইতেছে সেইখানে মুহূর্তকালের জন্ত দাড়াইতে পারিলে এই সমস্ত-কিছুর মহৎ অর্থ, ইহার পরম পরিণামটিকে দেখিতে পাইতাম। এই-ষে অচিন্তনীয় শক্তি, এই-বে অবর্ণনীয় সৌন্দর্য, এই-ষে অপরিসীম সত্য, এই-যে অপরিমেয় আনন্দ, ইহাকে যদি কেবল মাটি এবং জল বলিয়া জানিয়া গেলাম তবে সে কী ভয়ানক ব্যর্থতা, কী মহতী বিনষ্টি । নছে নহে, এই তে র্তাহার প্রসাদ, এই তো তাহার প্রকাশ, এই তো আমাকে স্পর্শ করিতেছে, আমাকে বেষ্টন করিতেছে, আমার চৈতন্তের তারে তারে স্বর বাজাইতেছে, আমাকে বাচাইতেছে, আমাকে জাগাইতেছে, আমার মনকে বিশ্বের নানা দিক দিয়া ডাক দিতেছে, আমাকে পলে পলে যুগযুগান্তরে পরিপূর্ণ করিতেছে ; শেষ নাই, কোথাও শেষ নাই, কেবলই আরও আরও আরও ; তবু সেই এক, কেবলই এক, সেই আনন্দময় অমৃতময় এক ! সেই অতল আকুল অখণ্ড নিস্তব্ধ নি:শব্দ স্বগষ্ঠীর এক— কিন্তু, কত তাহার ঢেউ, কত তাহার কলসংগীত ! প্রাণ ভরিয়ে, তৃবা হরিয়ে মোরে আরো আরো আরো দাও প্রাণ ! তব জুবনে, তব ভবনে মোরে আরো আরো আরো দাও স্থান ! আরো আলো আরো অালো মোর নয়নে, প্রভু, ঢালো ! স্বরে স্বরে বাশি পুরে তুমি আরো আরো আরো দাও তান ! আরো বেদনা, আরো বেদনা, মোরে আরো আরো দাও চেতনা ! দ্বার ছটায়ে, বাধা টুটায়ে মোরে করো ত্রাণ, মোরে করে ত্রাণ ! আরো প্রেমে, আরো প্রেমে মোর আমি ডুবে যাক নেমে !