পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

QSbr ኳ রবীন্দ্র-রচনাবলী পাইলাম। বাগানের মধ্যে গোলাপ যেমন একটি বিশেষ জাতের ফুল, বন্ধু তেমনি একটি বিশেষ জাতের মানুষ । এক-একটি লোক আছেন পৃথিবীতে র্তাহারা বন্ধু হইয়াই জন্মগ্রহণ করেন। মাহুষকে সঙ্গদান করিবার শক্তি র্তাহাদের অসামান্ত এবং স্বাভাবিক। আমরা সকলেই পৃথিবীতে কাহাকেও না কাহাকেও ভালোবালি, কিন্তু ভালোবালিলেও বন্ধু হইবার শক্তি আমাদের সকলের নাই। বন্ধু হইতে গেলে সঙ্গদান করিতে হয়। অন্যান্ত সকল দানের মতো এ দানেরও একটা তহবিল দরকার, কেবলমাত্র ইচ্ছাই যথেষ্ট নহে। রত্ব হইতে জ্যোতি যেমন সহজেই ঠিকরিয়া পড়ে তেমনি বিশেষ ক্ষমতাশালী মানুষের জীবন হইতে সঙ্গ আপনি বিচ্ছুরিত হইতে থাকে। প্রীতিতে প্রসন্নতাতে সেবাতে শুভ-ইচ্ছাতে এবং করশাপূর্ণ অন্তরাষ্টতে জড়িত এই-ষে সহজ লক্ষ, ইহার মতো দুর্লভ সামগ্রী পৃথিবীতে অতি অল্পই আছে। কবি যেমন আপনার আনন্দকে ভাষায় প্রকাশ করেন, তেমনি র্যাহারা স্বভাববন্ধু র্তাহারা মানুষের মধ্যে আপন আনন্দকে প্রতিদিনের জীবনে প্রকাশ করিয়া থাকেন । আমি এখানে যে বন্ধটিকে পাইলাম তাহার মধ্যে এই আনন্দ পাওয়া এবং আনন্ম দেওয়ার অবারিত ক্ষমতা আছে। এইরূপ বন্ধুত্বধনে ধনী লোককে লাভ করার স্ববিধ এই যে, একজনকে পাইলেই অনেককে পাওয়া যায়। কেননা, ইহাদের জীবনের সকলের চেয়ে প্রধান সঞ্চয় মনের মতো মাস্থ্য -সঞ্চয় । ইনি একজন স্ববিখ্যাত চিত্রকর ; ইনি অল্পকাল পূর্বে অল্পদিনের জন্ত ভারতবর্ষে গিয়াছিলেন। সেই অল্পকালের মধ্যে ইনি ভারতবর্ষের মর্মস্থানটি দেখিয়া লইয়াছেন। হৃদয় দিয়া দেখা চোখে দেখারই মতে— ইহা বিশ্লেষণের ব্যাপার নহে, স্বতরাং ইহাতে বেশি সময় লাগে না। হৃদয়ৰ্দষ্ট সম্বন্ধে কত জন্মান্ধ ভারতবর্ষে জীবন কাটাইয়া দিতেছে ; তাহারা আমাদের দেশের সেই আলোকটিকেই দেখিল না বাহাকে দেখিলে জার সমস্তকেই অনায়ালে দেখা যায়। যাহাঁদের দেখিবার চোখ জাছে তাহাজের জল্পকালের পরিচয় অন্ধের চিরজীবনের পরিচয়ের চেয়ে বেশি। ভারতবর্ষে ইহার সঙ্গে আমার ক্ষণকালের জন্য আলাপ হইয়াছিল। ইহার সহায়তা সর্বদাই এমন অবাধে প্রকাশ পায় যে তখনি আমার চিত্ত ইহার প্রতি বিশেষ ভাবে জারই হইয়াছিল। ইহার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত হইতে পারিব এই লোভটি রোপে ৰাজার সময় আমাকে সকলের চেয়ে টানিয়াছিল। ইহার সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটিব মাত্র এক মুহূর্তে ছোটেলের দেউড়ি পার হইয়া গেলাম— কেছ আর বাধা দিবার রছিল না । ভিড়ের ঠেলাঠেলিতে যেখানে তামাসা ভালো