পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

&\58 রবীন্দ্র-রচনাবলী । নহে, নিশ্চেষ্টত নহে। বস্তুত, সেই সীমার সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার দ্বারাই মাছৰ উদার হয়, সেই সীমার মধ্যে বিধৃত হওয়ার দ্বারাই মানুষের চেষ্টা বেগবান হইয়া উঠে। ব্যক্তি ব্যক্তি-হওয়ার দ্বারাই মানুষের মধ্যে গণ্য হয় ; জাতি জাতীয়ত্ব-লাভের দ্বারাই সর্বজাতির মধ্যে স্থান পাইতে পারে। ষে জাতি জাতীয়তা লাভ করে নাই সে বিশ্বজাতীয়তাকে হারাইয়াছে। যে লোক বড়ো লোক সেই লোকই সকলের চেয়ে বিশেষ করিয়া নিজেকে পাইয়াছে। যে ব্যক্তি নিজেকে পাইয়াছে তাহার আর জড়তার মধ্যে পড়িয়া থাকিবার জো নাই ; সে আপনার কাজ পাইয়াছে, সে আপনার স্থান পাইয়াছে, সে আপনার আনন্দ পাইয়াছে ; নদীর মতো সে বিনা দ্বিধায় আপনার বেগে আপনিই চলিতে থাকে, তাহার সত্য সীমাই সত্য পরিণামের দিকে তাহাকে সহজে চালনা করিয়া লইয়া বায় । k আবিরাবীর্ম এধি । যিনি প্রকাশস্বরূপ তিনি আমার মধ্যে, আমারই সীমার মধ্যে, প্রকাশিত হউন, ইহাই আমাদের সত্য প্রার্থনা । যদি আমার সীমাকে অবজ্ঞা করি তবে সেই অসীমের প্রকাশকে বাধা দিব। পাহি মাং নিত্যম্। আমাকে সর্বদা রক্ষা করো । আমার সত্যের মধ্যে, সীমার মধ্যে আমাকে রক্ষা করো ; আমি যেন সীমার বাহিরে আপনাকে হারাইয়া না ফেলি। আমি যাহা পূর্ণরূপে তাছাই হইয়া যেন তোমার প্রসন্নতাকে, তোমার আনন্দকে স্বম্পষ্টরূপে নিজের মধ্যে অনুভব করি । অর্থাৎ, আমার ষে সীমার মধ্যে তোমার বিলাস সেই সীমাকেই আনন্দের সহিত গ্রহণ করিয়া আমি যেন নিজের জীবনকে কৃতাৰ্থ করিতে পারি, ইহাই আমার অস্তিত্বের মূল অন্তরতর প্রার্থনা ৷ লণ্ডন সীমা ও অসীমত ধর্ম শব্দের গোড়াকার অর্থ, বাছা ধরিয়া রাখে। religion শব্দের ব্যুৎপত্তি আলোচনা করিলে বুঝা যায় তাহারও মূল অর্থ, বাহা বাধিয়া তোলে। অতএব, এক দিক দিয়া দেখিলে দেখা যায়, মাছুষ ধর্মকে বন্ধন বলিয়া স্বীকার করিয়াছে। ধর্মই মাহুষের চেষ্টার ক্ষেত্রকে সীমাবদ্ধ করিয়া সংকীর্ণ করিয়া তুলিয়াছে। এই বন্ধনকে স্বীকার করা, এই সীমাকে লাভ করাই মানুষের চরম সাধন । কেননা সীমাই স্বষ্টি। সীমারেখা যতই স্থবিহিত স্থম্পষ্ট হয় স্বটি ততই সত্য ও স্কন্ধর হইতে থাকে। মানদের স্বভাৰই এই গীৰাকে উদ্ভিন্ন করিয়া তোলা।