পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৫৯০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

¢१९ ब्रदौटल-ज्ञछनांबलौ। প্রধান কাজ। নানা শিক্ষকের নানা পরীক্ষার ভিতর দিয়া আমাদের দেশের শিক্ষার স্রোতকে সচল করিয়া তুলিতে পারিলে তবেই তাহা আমাদের দেশের স্বাভাবিক সামগ্রী হইয়া উঠবে। তবেই আমরা স্থানে স্থানে ও ক্ষণে ক্ষণে যথার্থ শিক্ষকের দেখা পাইব । তবেই স্বভাবের নিয়মে শিক্ষকপরম্পর আপনি জাগিয়া উঠিতে থাকিবে । ‘জাতীয়' নামের দ্বারা চিহ্নিত করিয়া আমরা কোনো-একটা বিশেষ শিক্ষাবিধিকে উদ্ভাবিত করিয়া তুলিতে পারি না। যে শিক্ষা স্বজাতির নানা লোকের নানা চেষ্টার দ্বারা নানা ভাবে চালিত হইতেছে তাহাকেই জাতীয় বলিতে পারি। স্বজাতীয়ের শাসনেই হউক আর বিজাতীয়ের শাসনে হউক, যখন কোনো-একটা বিশেষ শিক্ষাবিধি সমস্ত দেশকে একটা-কোনো ধ্রুব আদর্শে বাধিয়া ফেলিতে চায় তখন তাহাকে জাতীয় বলিতে পারিব না— তাহা সাম্প্রদায়িক, অতএব জাতির পক্ষে তাহা সাংঘাতিক । শিক্ষা সম্বন্ধে একটা মহৎ সত্য আমরা শিখিয়াছিলাম। আমরা জানিয়াছিলাম, মানুষ মানুষের কাছ হইতেই শিখিতে পারে ; যেমন জলের দ্বারাই জলাশয় পূর্ণ হয়, শিখার দ্বারাই শিখা জলিয়া উঠে, প্রাণের দ্বারাই প্রাণ সঞ্চারিত হইয়া থাকে । মানুষকে ছাটিয়া ফেলিলেই সে তখন আর মাস্থ্য থাকে নী— সে তখন আপিস-আদালতের বা কল-কারখানার প্রয়োজনীয় সামগ্ৰী হইয়া উঠে ; তখনি সে মাস্থ্য না হইয়া মাস্টারমশায় হইতে চায় ; তখনি সে আর প্রাণ দিতে পারে না, কেবল পাঠ দিয়া যায়। গুরুশিল্পের পরিপূর্ণ আত্মীয়তার সম্বন্ধের ভিতর দিয়াই শিক্ষাকাৰ সজীবদেহের শোণিতস্রোতের মতো চলাচল করিতে পারে। কারণ, শিশুদের পালন ও শিক্ষণের যথার্থ ভার পিতামাতার উপর। কিন্তু, পিতামাতার লে যোগ্যতা অথবা স্ববিধ না থাকাতেই, অন্ত উপযুক্ত লোকের সহায়তা অত্যাবস্তক হইয়া ওঠে । এমন অবস্থায় গুরুকে পিতামাতা না হইলে চলে না। আমরা জীবনের শ্রেষ্ঠ জিনিসকে টাকা দিয়া কিনিয়া বা আংশিক ভাবে গ্রহণ করিতে পারি না ; তাছা স্নেহ প্রেম ভক্তির দ্বারাই আমরা আত্মসাৎ করিতে পারি ; তাছাই মন্থন্তত্বের পাকৰন্ত্রের জারক রস ; তাছাই জৈব সামগ্রীকে জীবনের সঙ্গে সম্মিলিত করিতে পারে। বর্তমান কালে আমাদের দেশের শিক্ষায় সেই গুরুর জীবনই সকলের চেয়ে অত্যাবস্তক হইয়াছে । শিশুবয়সে নিজীব শিক্ষার মতো ভয়ংকর ভার আর-কিছুই নাই ; তাহা মনকে যতটা দেয় তাহার চেয়ে পিৰিয়া বাহির করে অনেক বেশি। আমাদের সমাজব্যবস্থায় আমরা সেই গুরুকে খুজিতেছি ৰিনি আমাদের জীবনকে গতিদান করিবেন ; আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় আমরা সেই গুক্ষকে খুজিতেছি ধিনি আমাদের চিত্তের গতিপথকে বাধাযুক্ত করিবেন। যেমন করিয়া