পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

45ν. ब्रबैौटश-ब्रध्नांयलौ বিশ্রাম নেই। উকুনে যেন জলা কাঠ নিভেছে তৰু কয়লায় রয়েছে আগুন । তেলকল চলে না, স্টিমারের বঁশি থেমে থাকে, কারখানাঘর থেকে মজুরের দল বেরিয়ে গেছে, পাটের-গাট-টানা গাড়ির মোষগুলো গেছে টিনের চালের নীচে শহরে গোষ্ঠে । সমস্ত দিন ষে শহরের মাথা ছিল নানা চিন্তায় তেতে আগুন, এখনও তার নাড়িগুলো যেন দব দব করছে। রাস্তার দু ধারে দোকানগুলোতে কেনাবেচা তেমনি আছে, কেবল সামান্ত কিছু ছাই-চাপা। রকম-বেরকমের গোঙানি দিতে দিতে হাওয়াগাড়ি ছুটেছে দশ দিকে ; তাদের দৌড়ের পিছনে গরজের ঠেলা কম। আমাদের সেকালে দিন ফুরলে কাজকর্মের বাড়তি ভাগ যেন কালো কম্বল মুড়ি দিয়ে চুপচাপ শুয়ে পড়ত শহরের বাতি-নেবানো নীচের তলায় । ঘরে-বাইরে সন্ধ্যার আকাশ থম্ থম্ করত। ইডেন গার্ডেনে গঙ্গার ধারে শৌখিনদের হাওয়া খাইয়ে নিয়ে ফেরবার গাড়িতে সইসদের হৈ হৈ শঙ্ক রাস্তা থেকে শোনা যেত। চৈৎ-বৈশাখ মাসে রাস্তায় ফেরিওয়ালা হেঁকে যেত ‘বরীফ"। হাড়িতে বরফ-দেওয়া নোনতা জলে ছোটো ছোটো টিনের চোঙে থাকত যাকে বলা হোত কুলফির বরফ, এখন যাকে বলে আইস কিংবা আইসক্রীম । রাস্তার দিকের বারান্দায় দাড়িয়ে সেই ডাকে মন কী রকম করত তা মনই জানে। আর-একটা হাক ছিল 'বেলফুল’ । বসন্তকালের সেই মালীদের ফুলের ঝুড়ির খবর আজ নেই, কেন জানি নে । তখন বাড়িতে মেয়েদের খোপা থেকে বেলফুলের গোড়ে মালার গন্ধ ছড়িয়ে যেত বাতালে। গা ধুতে যাবার আগে ঘরের সামনে বলে সমূখে হাত-আয়না রেখে মেয়ের চুল বাধত । বিহুনি-করা চুলের দড়ি দিয়ে খোপা তৈরি হত নানা কারিগরিতে। তাদের পরনে ছিল ফরাসডাঙার কালাপেড়ে শাড়ি, পাক দিয়ে কুঁচকিয়ে তোলা । নাপতিনি আসত, ঝামা দিয়ে পা ঘসে আলতা পরাত । মেয়েমহলে তারাই লাগত খবর-চালাচালির কাজে । ট্রামের পায়দানের উপর ভিড় করে কলেজ আর আপিল ফেরার দল ফুটবল খেলার ময়দানে ছুটত না। ফেরবার সময় তাদের ভিড় জমত না সিনেম+ হলের সামনে। নাটক-অভিনয়ের একটা ফুর্তি দেখা দিয়েছিল, কিন্তু কী আর বলৰ, আমরা সে সময়ে ছিলুম ছেলেমানুষ । তখন বড়োদের আমোদে ছেলেরা দূর থেকেও ভাগ বসাতে পেত না। যদি সাহস করে কাছাকাছি বেতুষ তা হলে শুনতে হত ‘বাও খেলা করে গে’, অথচ ছেলেরা খেলায় যদি উচিতষত গোল করত তা হলে শুনতে হত "চুপ করে। বড়োনের আমোদ-আলা সবসন খুব বে চুপচাপে সারা হত তা নয়। তাই ত্র থেকে কখনো কখনো করনার ফেলার মতো তার ক্লিয় কিছু পড়ত ছিটকিয়ে আমাদের