পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষড়্‌বিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

●や রবীন্দ্র-রচনাবলী কটা গা ষে তুমি জিতে নিয়েছ। বিধাতাপুরুষ নিষ্ঠুর, তাই তোমায় মোলাম করতে হয় তার শাসন । পুষ্প । না জ্যাঠামশায়, বাড়িয়ে বোলো না। আমি মজা দেখতে বেরিয়েছি— ছুটি পেয়েছি বই পড়ার গারদ থেকে । দেখতে এলুম কেমন ক’রে নিজের পায়ে বেড়ি আর নিজের গলায় ফাল পরাতে নিস্পিস করতে থাকে মানুষের হাত ছুটে । এ না হলে ভবের খেলা জমত না । ভগবান বোধ হয় রসিক লোক, হাসতে ভালোবাসেন । ষষ্ঠী। না মা, সবই অদৃষ্ট । হাতে হাতে দেখে-না ! বড়ো বৌয়ের ছেলেপুলের দেখা নেই। ভাবলেম, পিতৃপুরুষ পিণ্ডি না পেয়ে শুকিয়ে মরবেন বৈতরণীতীরে । ধীরে বেঁধে দিলেম মাখনের দ্বিতীয় বিয়ে, আর সবুর সইল না, দেখতে দেখতে পরে পরে দুই পক্ষেরই কল্যাণে চারটি মেয়ে তিনটি ছেলে দেখা দিল আমার ঘরে । পুপ। এবারে পিতৃপুরুষের অজীর্ণ রোগের আশঙ্কা দেখছি। ষষ্ঠী। মা, তোমার সব ভালো, কেবল একটা বড়ো খটকা লাগে– মনে হয়, তুমি দেবতা ব্রাহ্মণ মানই না । পুষ্প । কথাটা সত্যি । ষষ্ঠী। কেন মা, ঐ খুংটুকু কেন থেকে যায়। পুপ। সংসারে দেবতাত্রাক্ষণের অবিচারের বিরুদ্ধেই যে লড়াই করতে হয়, ওদের মানলে জোর পেতুম না । সে কথা পরে হবে, আমি মাথনের খোজেই আছি। ষষ্ঠ। জান তো মা, ও কিরকম হো হো করে বেড়াত— কেবল খেলাধুলো, কেবল ঠাট্টাতামাসা । ভয় হত, কোথায় কী করে বলে ! তাই তো ওর গলায় একটা নোঙরের পর আর-একটা নোঙর ঝুলিয়ে দিলুম। পুষ্প । নোঙর বেড়েই চলল, ভারে নেীকো তলিয়ে যাবার জো । আমি তোমাদের পাড়ায় এসেছি হৈমির খবর নেধর জন্তে । শুনলুম, সে তোমার এখানেই আছে । ষষ্ঠী। ই মা, এতদিন আমি ছিলুম নামেই মামা । তার বিয়ের পর থেকে এই তাকে দেখলুম। বুক জুড়িয়ে গেল তার মধুর স্বভাবে । তারও স্বামী পালিয়েছে। হল কি বলে তো ! কনগ্রেসওয়ালারা এর কিছু করে উঠতে পারলে না ? পুষ্প । মহাত্মাক্তিকে বললে এখনি তিনি মেয়েদের লাগিয়ে দেবেন অসহযোগ আন্দোলনে। দেশে হাতাবেড়ির আওয়াজ একেবারে হবে বদ্ধ। গলির মোড়ে খুত্ব ময়রার দোকানে তেলে-ভাঙ্গা ফুলুর গেয়ে বাবুদের স্থাপিলে ছুটতে হবে— দুদিন বাদেই লিক্‌ লাভের দরখাস্ত । ষষ্ঠ । ও সর্বনাশ !