পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গোরা २8¢ बिनय ८र्थझा थाहेब्र कश्णि, "दकूग्न कक्षा রেখে দিন। আমি সাত জন্মে কখনো অভিনয় করি নি— আমাকে কেন ?” ললিত কহিল, “আমরাই বুৰি জন্মজন্মান্তর অভিনয় করে আসছি ?” এই সময় বরদাসুন্দরী ঘরের মধ্যে আলিয়া বসিলেন । ললিত কহিল, “মা, তুমি অভিনয়ে বিনয়বাবুকে মিথ্যা ডাকছ । আগে ওঁর বন্ধুকে যদি রাজি করাতে পার তা হলে—” বিনয় কাতর হইয়া কছিল, “বন্ধুর রাজি হওয়া নিয়ে কথাই হচ্ছে না। অভিনয় তো করলেই হয় না— আমার যে ক্ষমতাই নেই।” বরদাসুন্দরী কছিলেন, “সেজন্তে ভাববেন না— আমরা আপনাকে শিখিয়ে ঠিক করে নিতে পারব | ছোটো ছোটো মেয়েরা পারবে, আর আপনি পারবেন না !” বিনয়ের উদ্ধারের আর কোনো উপায় রহিল না । & S গোর তাহার স্বাভাবিক দ্রুতগতি পরিত্যাগ করিয়া অন্যমনস্ক ভাবে ধীরে ধীরে বাড়ি চলিল । বাড়ি যাইবার সহজ পথ ছাড়িয়া সে অনেকটা ঘুরিয়া গঙ্গার ধারের রাস্তা ধরিল । তখন কলিকাতার গঙ্গা ও গঙ্গার ধার বণিক্‌-সভ্যতার লাভলোলুপ কুঐতায় জলে স্থলে আক্রাস্ত হইয়া তীরে রেলের লাইন ও নীরে ব্রিজের বেড়ি পরে নাই । তখনকার শীতসন্ধ্যায় নগরের নিশ্বাসকালিমা আকাশকে এমন নিবিড় করিয়া আচ্ছন্ন করিত না। নদী তখন বহুদূর হিমালয়ের নির্জন গিরিশৃঙ্গ চুইতে কলিকাতার পৃলিলিপ্ত ব্যস্ততার মাঝখানে শাস্তির বার্তা বহন করিয়া জানিত । প্রকৃতি কোনোদিন গোরার মনকে আকর্ষণ করিবার অবকাশ পায় নাই । তাহার মন নিজের সচেষ্টতার বেগে নিজে কেবলই তরঙ্গিত হইয়া ছিল ; যে জল স্থল আকাশ অব্যবহিতভাবে তাহার চেষ্টার ক্ষেত্র নহে তাছাকে সে লক্ষ্যই করে নাই । আজ কিন্তু নদীর উপরকার ওই আকাশ আপনার নক্ষত্রালোকে অভিষিক্ত অন্ধকার-স্বারা গোরার হৃদয়কে বারম্বার নিঃশস্বে স্পর্শ করিতে লাগিল । নদী নিস্তরঙ্গ । কলিকাতার তীরের ঘাটে কতকগুলি নৌকায় আলো জলিতেছে আর কতকগুলি দীপহীন নিস্তব্ধ । ও পারের নিবিড় গাছগুলির মধ্যে কালিমা ঘনীভূত । তাহারই উর্ধ্বে বৃহস্পতিগ্রন্থ অন্ধকারের জন্তর্যামীর মতো তিমিরভেদী অনিমেষদৃষ্টিতে স্থির হইয়া আছে ।