গোরা &br○ বিনা প্রয়োজনে মাধবকে রাগ প্রকাশ করিতে কেহ কোনোদিন দেখে নাই। কোন মামুষের দ্বারা কখন কী কাজ পাওয়া যায়, অথবা বক্র হইলে কfহার দ্বারা কী অপকার হইতে পারে তাহা বলা যায় কি ? কাহারও অনিষ্ট বা অপমান সে খুব হিসাব করিয়াই করিত— রাগ করিয়া পরকে আঘাত করিবার ক্ষমতার বাজে খরচ করিত না । দারোগা তখন গোরাকে কহিল, “দেখো বাপু, আমরা এখানে সরকারের কাজ করতে এসেছি, এতে যদি কোনো কথা বল বা গোলমাল কর তা হলে মুশকিলে পড়বে।” গোরা কোনো কথা না বলিয়; ঘর হইতে বাহির হইয়! গেল । মালব তাড়াতাড়ি তাহার পশ্চাতে গিয়া কহিল, “মশায়, যা বলছেন সে কথাট; ঠিক – আমাদের এ কসাইয়ের কাজ– আর ওই-যে বেটা দারোগ দেখছেন ওর সঙ্গে এক বিছানায় বসলে পাপ হয়— ওকে দিয়ে কত যে দুষ্কৰ্ম করিয়েছি তা মূপে উচ্চারণ করতেও পারি নে। আর বেশি দিন নয়— বছর দুৰ্ত্তিন কাজ করলেই মেয়ে-কটার বিয়ে দেবার সম্বল করে নিয়ে তার পরে ঈী-পুরুষে কাশীবাসী হব । আর ভালো লাগে না মশায়, এক-এক সময় ইচ্ছা হয় গলায় দড়ি দিয়ে মরি! যা হোক, আজ রাত্রে যাবেন কোথায় ? এই পানেই আহারাদি করে শয়ন করবেন । ও দারোগা বেটার ছায় মাড়াতেও হবে না, আপনার জন্যে সমস্ত আলাদা বন্দোবস্ত করে দেব ।” গোরার ক্ষুধা সাধারণের অপেক্ষা অধিক— আজ প্রাতে ভালো করিয়া ধাওয়াও হয় নাই – কিয় তা9ার সর্বশরীর যেন জলিতেছিল— সে কোনোমতেই এখানে থাকিতে পারিল না, কহিল, “আমার বিশেষ কাজ আছে ।" মাধব কছিল, “তা, রসুন, একটা লণ্ঠন সঙ্গে দিই ।” গোরা তাহার কোনো জবাব না করিয়া দ্রুতপদে চলিয়া গেল । মাধব ঘরে ফিরিয়া আসিয়া কহিল, "দাদা, ও লোকটা সম্বরে গেল । এইবেল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে একটা লোক পাঠাও।” দারোগী কহিল, “কেন, কী করতে হবে ?" মাধব কহিল, “আর কিছু নয়, একবার কেবল জানিয়ে আমুক, একজন ভদ্রলোক কোথা থেকে এসে সাক্ষী ভাণ্ডাবার জন্তে চেষ্টা করে ৰেড়াচ্ছে ।” 업 ম্যাজিস্ট্রেট ব্রাউনলো সাহেব দিবাবসানে নদীর ধারের রাস্তায় পদব্রজে বেড়াইতেছেন, সঙ্গে হারানবাবু রহিয়াছেন। কিছু দূরে গাড়িতে তাহার মেম পরেশবাবুর মেয়েদের লইয়া হাওয়া খাইতে বাছির হইয়াছেন।
