পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्रदौठल-ब्रक्रमांबलौ جب8b করে হোক তারই শাসনপাশ গলায় বেঁধে বেড়াতে হবে, তাতে প্রাণ থাক আর নাথাক, এ আমি কোনোমতেই স্বীকার করতে পারব না।” গোরা কছিল, "মহাভারতের সেই ব্রাহ্মণশিশুটির মতো খড়কে নিয়ে বকাসুর বধ করতে বেরোবে না কি ?” বিনয় কহিল, “আমার খড়কেতে বকাস্থর মরবে কিনা তা জানি নে, কিন্তু আমাকে চিবিয়ে খেয়ে ফেলবার অধিকার ষে তার আছে এ কথা আমি কোনোমতেই মানব না— যখন সে চিবিয়ে খাচ্ছে তখনো না ।” গোরা কহিল, “এ-সমস্ত তুমি রূপক দিয়ে কথা বলছ, বোঝা কঠিন হয়ে উঠছে।” বিনয় কহিল, “বোঝা তোমার পক্ষে কঠিন নয়, মানাই তোমার পক্ষে কঠিন। মানুষ যেখানে স্বভাবত স্বাধীন, ধর্মত স্বাধীন, আমাদের সমাজ সেখানে তার খাওয়াশোওয়া-বসাকেও নিত্যস্ত অর্থহীন বন্ধনে বেঁধেছে এ কথা তুমি আমার চেয়ে কম জান তা নয় ; কিন্তু এই জবৰ্দ্দস্তিকে তুমি জবৰ্দস্তির দ্বারাষ্ট মানতে চাও। আমি আজ বলছি, এখানে আমি কারও জোর মানব না । সমাজের দাবিকে আমি ততক্ষণ পর্যস্ত স্বীকার করব যতক্ষণ সে আমার উচিত দাবিকে রক্ষা করবে। সে যদি আমাকে মানুষ বলে গণ্য না করে, আমাকে কলের পুতুল করে বানাতে চায়, আমিও তাকে ফুলচন্দন দিয়ে পূজা করব না— লোহার কল বলেই গণ্য করব।” গোরা কহিল, "অর্থাৎ, সংক্ষেপে, তুমি ব্রাহ্ম হবে ?” বিনয় কহিল, “না ।” গোরা কহিল, “ললিতাকে তুমি বিয়ে করবে ?” বিনয় কহিল, “ই ।” গোরা জিজ্ঞাসা করিল, “হিন্দুবিবাহ ?” বিনয় কছিল, “ই ।” গোরা । পরেশবাবু তাতে সন্মত আছেন ? বিনয় । এই তার চিঠি। গোরা পরেশের চিঠি দুই বার করিয়া পড়িল । তাহার শেষ অংশে ছিল— ‘আমার ভালো মন্দ লাগার কোনো কথা তুলিব না, তোমাদের স্ববিধা-অসুবিধার কোনো কথাও পাড়িতে চাই না । আমার মত-বিশ্বাস কী, আমার সমাজ কী, সে তোমরা জান, ললিতা ছেলেবেলা হইতে কী শিক্ষণ পাইয়াছে এবং কী সংস্কারের মধ্যে মান্তষ হইয়াছে তাও তোমাদের অবিদিত নাই । এ-সমস্তই জানিয়া শুনিয়া তোমাদের পথ তোমরা নির্বাচন করিয়া