পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬০১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লোকসাহিত্য «w-% পাঠক বোধ করি ইহাও লক্ষ করিয়া দেখিয়া থাকিবেন, আমাদের প্রথমোদস্তুত ছড়াটির সহিত এই ছড়া কেমন করিয়া মিশিয়া গিয়াছে । যেমন মেঘে মেঘে স্বপ্নে স্বপ্নে মিলাইয়া যায় এই ছড়াগুলিও তেমনি পরস্পর জড়িত মিশ্রিত হইতে থাকে, সেজন্য কোনো কবি চুরির অভিযোগ করে না এবং কোনো সমালোচকও ভাববিপর্যয়ের দোষ দেন না । বাস্তবিকই এই ছড়াগুলি মানসিক মেঘরাজ্যের লীলা, সেখানে সীমা বা আকার বা অধিকার -নির্ণয় নাই। সেখানে পুলিস বা আইন-কাহনের কোনো সম্পর্ক দেখা যায় না । অন্যত্র হইতে প্রাপ্ত নিম্নের ছড়াটির প্রতি মনোযোগ করিয়া দেখুন। ও পারে জস্তি গাছটি, জস্তি বড়ো ফলে । গো জস্তির মাথা খেয়ে প্রাণ কেমন করে ॥ প্রাণ করে হাইঢ়াই, গলা হল কাঠ । কতক্ষণে যাব রে ভাই হরগৌরীর মাঠ । হরগেীরীর মাঠে রে ভাই পাকা পাকা পান । পান কিনলাম, চুন কিনলাম, ননদে ভাজে খেলাম । একটি পান হারালে দাদাকে ব’লে দেলাম ॥ দাদা দাদা ডাক ছাড়ি, দাদা নাইকো বাড়ি । স্ববল সুবল ডাক ছাড়ি, সুবল আছে বাড়ি ॥ আজ সুবলের অধিবাস, কাল মুবলের বিয়ে । স্ববলকে নিয়ে যাব আমি দিগনগর দিয়ে । দিগনগরের মেয়েগুলি নাইতে বসেছে । মোটামোটা চুলগুলি গো পেতে বসেছে। চিকন চিকন চুলগুলি ঝাড়তে নেগেছে হাতে তাদের দেবশাখা মেঘ নেগেছে । গলায় তাদের তক্তিমালা, রক্ত ছুটেছে । পরনে তার ডুরে শাড়ি ঘুরে পড়েছে। দুই দিকে দুই কাংলা মাছ ভেসে উঠেছে ৷ একটি নিলেন শুরুঠাকুর, একটি নিলেন টিয়ে ॥ টিয়ের মার বিয়ে নাল গামছা দিয়ে । অশথের পাতা ধনে । গৌরী বেটী কনে ।