পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(వ8 রবীন্দ্র-রচনাবলী দিরা অপরাঙ্কুের অবসানস্বর্যালোকে জননী তাহার খোকাবাবুকে ডাকিতেছেন ; বেড়ার নিকটে ঘরে-ফেরা বাধা গোরুটিও স্তিমিত কৌতুহলে সেই দিকে চাহিয়া দেখিতেছে এবং ভোজনতৃপ্ত থোকাবাবু নালবন শৈবালবনের মাঝখানে হঠাৎ মায়ের ডাক শুনিয়া সচকিতে কুটিরের দিকে চাহিয়া উড়ি-উড়ি করিতেছে সেও স্বন্দর দৃশু— এবং তাহার পর তৃতীয় দৃশ্বে পাখিটি মার বুকে গিয় তাহার কাধে মুখ লুটাইয়াছে এবং দুই ডানায় তাহাকে অনেকটা ঝাপিয়া ফেলিয়াছে এবং নির্মীলিতনেত্র মা দুই হস্তে স্বকোমল ডানা-মৃদ্ধ তাহাকে বেষ্টন করিয়া নিবিড় স্নেহবন্ধনে বুকে বধিয়া ধরিয়াছেন সেও সুন্দর দেখিতে হয় । জ্যোতির্বিদগণ ছায়াপথের নীহারিক পর্যবেক্ষণ করিতে করিতে দেখিতে পান সেই জ্যোতির্ময় বাষ্পরাশির মধ্যে মধ্যে এক-এক জায়গায় যেন বাষ্প সংহত হইয়া নক্ষত্রে পরিণত হইবার উপক্রম করিতেছে । আমাদের এই ছড়ার নীহারিকারাশির মধ্যেও সহসা স্থানে স্থানে সেইরূপ অৰ্ধসংহত আকারবদ্ধ কবিত্বের মূর্তি দৃষ্টিপথে পড়ে । সেই-সকল নবীনস্থষ্ট কল্পনামগুলের মধ্যে জটিলতা কিছুই নাই ; প্রথম বয়সের শিশু-পৃথিবীর ন্যায় এখনো সে কিঞ্চিৎ তরলাবস্থায় আছে, কঠিন হষ্টয় উঠে নাই । একটা উদ্ধৃত করি— জাছ, এ তো বড়ো রঙ্গ জাদু, এ তো বড়ো রঙ্গ । চার কালো দেখাতে পার যাব তোমার সঙ্গ ৷ কাক কালো, কোকিল কালো, কালো ফিঙের বেশ । তাহার অধিক কালে, কন্যে, তোমার মাথার কেশ ॥ জাদু, এ তো বড়ো রঙ্গ জাদু, এ তো বড়ো রঙ্গ । চার ধলো দেপাতে পার যাব তোমার সঙ্গ । বক ধলো, বস্ত্র ধলো, ধলে রাজহংস । তাহার অধিক ধলো, কন্তে, তোমার হাতের শঙ্খ ॥ জাছ, এ তো বড়ে রঙ্গ জাদু, এ তো বড়ো রঙ্গ । চার রাঙা দেখাতে পার যাব তোমার সঙ্গ । জবা রাঙা, করব রাঙা, রাঙা কুমুমফুল । তাহার অধিক রাঙা, কন্তে, তোমার মাথার লিঙ্কুর । জাদু, এ তো বড়ো রঙ্গ জড়ি, এ তো বড়ো রঙ্গ । চার তিতো দেখাতে পার যাব তোমার সঙ্গ ॥