পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S(te রবীন্দ্র-রচনাবলী স্থযোগ পাইলে শিবনিন্দ করিতে ছাড়েন না ; এ কথার প্রতিবাদ করিতে না পারিয়া ক্লষ্ট হইয়া বলিয়া উঠিলেন— Q पों, তুমি বল নিষ্ঠুর কুঠুর, শম্ভূ বলেন শিলা । ছার মেনকার বুদ্ধি শুনে তোমায় নিতে এলাম । তখন শুনে কথা জগৎমাত কঁাদিয়া অস্থির । পাঢ়া মেঘের বৃষ্টি যেন প’ল এক রীত । নয়নজলে ভেসে চলে, আকুল হল নন্দী— কৈলাসেতে মিলল ঝরা, হল একটি নদী ॥ কেঁদে না মা, কেঁদো না মা ত্রিপুরস্কন্দরী । কাল তোমাকে নিয়ে যাব পাষাণের পুরী ॥ সন্দেশ দিয়েছিলেন মেনকারানী, দিলেন দুর্গার হাতে । তুষ্ট হয়ে নারায়ণী ক্ষাস্ত পেলেন তাতে ॥ উমা কন শুন বাবা, বোসো পুনর্বার। জলপান করিতে দিলেন নানা উপহার ॥ যত্ব করি মহেশ্বরী রামুন করিলা । শ্বশুর জামাতা দোহে ভোজন করিলা । ছড়া যাহাদের জন্য রচিত তাহারা যদি আজ পর্যস্ত ইহার ছন্দোবন্ধ ও মিলের বিরুদ্ধে কোনো আপত্তি না করিয়া থাকে, তবে আমাদের বলিবার কোনো কথাই নাই ; কিন্তু জামাতৃগৃহে সমাগত পিতার সহিত কন্যার মান-অভিমান ও তাহার শাস্তি ও পরে আহার-অভ্যর্থনা— এই গৃহচিত্ৰ যেন প্রত্যক্ষের মতো দেখা যাইতেছে। নন্দটা এক পাশে দাড়াইয়া ছিল, সে মাঝে হইতে আকুল হইয়া গেল । শ্বশুরজামাতা ভোজনে বসিয়াছেন এবং গৌরী স্বহস্তে রন্ধন করিয়া উভয়কে পরিবেষণ করিতেছেন, এ চিত্র মনে গাথা হইয়া রহিল । শয়নকালে দুর্গ বলে আজ্ঞা দেহ স্বামী । ইচ্ছা হয় যে বাপের বাড়ি কাল যাইব আমি ॥ শুন গৌরী কৈলাসপুরী তুচ্ছ তোমার ঠাই। দেখছি তোমার কাঙাল পিতার ঘর-দরজা নাই ॥ শেষ দুইটি ছত্ৰ বুঝিতে একটু গোল হয় ; ইহার অর্থ এই যে, তোমার বাসের পক্ষে কৈলাসপুরীই তুচ্ছ, এমন স্থলে তোমার কাঙাল পিতা তোমাকে স্থান দিতে পারেন এমন সাধ্য র্তাহার কী আছে!