পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লোকসাহিত্য )۹ )وبی মেনকা গো মা, * কী কুক্ষণে বাড়ছিলাম পা ৷ মরিব মরিব মা গো হব আত্মঘাতী । আপনার গলে দিব নরসিংহ কাতি ॥ অবশেষে অন্য উপায় না দেখিয়া দুর্গা ধূপদীপনৈবেদ্য লইয়া ধ্যানে বসিলেন। ধ্যানে পেলেন মহাদেবের চরণ দুখান । তখন ব্যাপারটা বুঝা গেল, দেবতার কৌতুকের পরিসমাপ্তি হইল । কোথা বা কন্যা, কোথা বা জামাতা । সকলই দেখি যেন আপন দেবতা ৷ এ যেন ঠিক স্বপ্নের মতো হইল। নিমেষের মধ্যে— 粵 দুর্গা গেলেন কৈলাসে, শিব গেলেন শ্মশানে । ভাঙ ধুতুরা বেঁটে দুর্গ বসলেন আসনে । সন্ধ্যা হলে দুই জনে হলেন একখানে ॥ এইখানে চতুর্থ ছত্রের অপেক্ষ না রাখিয়াই ছড়া শেষ হইয়া গেল । রাধাকৃষ্ণ সম্বন্ধীয় ছড়াগুলির জাতি স্বতন্ত্র । সেখানে বাস্তবিকতার কোঠা পার হইয়া মানসিকতার মধ্যে উত্তীর্ণ হইতে হয়। প্রাত্যহিক ঘটনা, সাংসারিক ব্যাপার, সামাজিক রহস্য সেখানে স্থান পায় না । সেই অপরূপ রাখালের রাজ্য বাঙালি ছড়া রচয়িতা ও শ্রোতাদের মানসরাজ্য । স্থানে স্থানে ফেরেন রাখাল সঙ্গে কেহ নাই । ভাণ্ডীবনে ধেমু চরান সুবল কানাই । সুবল বলিছে শুন ভাই রে কানাই আজি তোরে ভাণ্ডীবনবিহারী সাজাই । এই সাজাইবার প্রস্তাব মাত্র শুনিয়া নিকুঞ্জে যেখানে যত ফুল ছিল সকলেই আগ্রহে ব্যাকুল হইয়া উঠিল । কদম্বের পুষ্প বলেন, সভা-বিদ্যমানে সাজিয়া দুলিব আজি গোবিন্দের কানে ॥ করবীর পুষ্প বলেন, আমার মর্ম কে বা জানে— আজ আমায় রাখবেন হরি চূড়ার সাজনে ।