পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৬৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী هواوا রাধা প্রথম আবেগে যদিও বলিয়াছিলেন যে সাজে আছেন সেই সাজেই যাইবেন, কিন্তু সে প্রতিজ্ঞা রহিল না । (l হালিয়া মাথার বেণী বামে বাধি চুড়া, অলকা তিলকা দিয়ে, এটে পরে ধড়া । ধড়ার উপরে তুলে নিলেন স্ববর্ণের ঝরা ॥ সোনার বিজটা শোভে হাতে তাড়বালা । গলে শোভে পঞ্চরত্ন তক্তি কণ্ঠমালা ॥ চরণে শোভিছে রাইয়ের সোনার নুপুর । কটিতে কিংকিণী সাজে, বাজিছে মধুর। চিস্তা নাই চিস্তা নাই বিশাখ এসে বলে ধবলীর বংস একটি তুলে লও কোলে । . সখীরা সব দধির ভাণ্ড মাথায় এবং রাধিক ধবলীর এক বাছুর কোলে লইয়া, গোয়ালিনীর দল ব্রজের পথ দিয়া তাম-দরশনে চলিল। কৃষ্ণ তখন রাধিকার রূপ ধ্যান করিতে করিতে অচেতন । সাক্ষাতে দাড়ায়ে রাষ্ট বলিতেছে বাণী কী ভাব পড়িছে মনে শু্যাম গুণমণি । যে ভাব পড়েছে মনে সেই ভাব আমি ॥ রাধিক সগর্বে সবিনয়ে কহিলেন, তোমারই অন্তরের ভাব আমি বাহিরে প্রত্যক্ষ বিরাজমান – Q গাও তোলে চক্ষু মেলে ওহে নীলমণি । কাদিয়ে কাদাও কেন, আমি বিনোদিনী ॥ অঞ্চলেতে ছিল মালা দিল কষ্ণের গলে । রাধাকৃষ্ণের যুগল মিলন ভাণ্ডীরবনে । ভাণ্ডীরবনবিহারীর সাজ সম্পূর্ণ হইল ; স্ববলের হাতের কাজ সমাধা হইয়া গেল । ইহার মধ্যে বিশেষ করিয়া বাংলার গ্রামদূত গৃহচিত্র কিছুই নাই। গোয়ালিনীরা যেরূপ সাজে নূপুর-কিংকিণী বাজাইয়া দধি-মাথায় বাছুর-কোলে বনপথ দিয়া চলিয়াছে তাহা বাংলার গ্রামপথে প্রত্যহ, অথবা কদাচিৎ, দেখিতে পাওয়া যায় না । রাখালের মাঠের মধ্যে বটচ্ছায়ায় অনেক রকম খেলা করে, কিন্তু ফুল লইয়া তাহদের ও তাহাদিগকে লইয়া ফুলের এমন মাতামাতি শুনা যায় না। এ-সমস্ত ভাবের স্বষ্টি । কৃষ্ণরাধার বিরহ-মিলন সমস্ত বিশ্ববাসীর বিরহ-মিলনের আদর্শ ; ইহার মধ্যে