পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

হাস্তকৌতুক శ్రీల /রোগীর বন্ধু রেলগাড়িতে তুঃখীরাম ও বৈদ্যনাথবাবু বৈদ্যনাথ । ( মাথায় হাত দিয়া ) উ— উ– উঃ ! দুঃর্থীরাম । ( দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া ) হা— হা: ! কাতরভাবে বৈদ্যনাপের প্রতি নিরীক্ষণ বৈদ্যনাথ । ( দুঃপীরামের মনোযোগ দেপিয়া ) দেখছেন তো মশায়, ব্যামোর কষ্টট তো দেখছেন ! দুঃখীরাম । না, আমি তা দেখছি নে। আপনাকে দেখে আমার পুনর্বার ভ্রাতৃ শোক উপস্থিত হচ্ছে । হা হা: ! নিস্বাস বৈদ্যনাথ । সে কী কথা ! ছ:থীরাম । গ মশায় ! মরবার সময় তার ঠিক আপনার মতো চেহারা হয়ে এসেছিল— বৈদ্যনাথ ! ( শশব্যস্ত হইয়া ) বলেন কী ! দুঃখীরাম । যথার্থ কথা । ওই-রকম তার চোখ বসে গিয়েছিল, গালের মাংস ঝুলে পড়েছিল, হাত-পা সরু হয়ে গিয়েছিল, ঠোট সাদা, মুখের চামড়া হলদে– বৈদ্যনাথ । ( আকুলভাবে ) বলেন কী মশায় ! আমার কি তবে এমন দশা হয়েছে ? এ কথা আমাকে তো কেউ বলে নি— দুঃখীরাম । কেনই বা বলবে ? এ সংসারে প্রকৃত বন্ধু কেই বা আছে ? দীর্ঘনিশ্বাস বৈদ্যনাথ । ডাক্তার তো আমাকে বারবার বলেছে আমার কোনো ভাবনার কারণ নেই । দুঃখীরাম । ডাক্তার ? ডাক্তারের কথা আপনি এক তিল বিশ্বাস করেন ? ডাক্তারকে বিশ্বাস করেই কি আমরা অকূল পাথরে পড়ি নি ? যখন আসন্ন বিপদ সেই সময়েই তারা বেশি করে আশ্বাস দেয়, অবশেষে যখন রোগীর হাতে পায়ে খিল ধরে আসে, তার চোখ উলটে যায়, তার গা-হাত-পা হিম হয়ে আসে, তার— বৈদ্যনাথ । ( দুঃখীরামের হাত ধরিয়া ) ক্ষমা করুন মশায়, আর বলবেন না মশায় ! আমার গা-হাত-পা হিম হয়েই এসেছে । আপনার বর্ণনা সদ্যসদ্যই খেটে যাবে।