পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অচলায়তন VS 5R আমি করে ডাকি গো আমার বঁাধন দাও গো টুটে । আমি হাত বাড়িয়ে আছি তুমি যেন যেন সব ফেলে যাই, সব ঠেলে যাই, আমি কেবল সে যে জড়িয়ে আছে প্ৰাণের কাছে ওগো দিনের পরে দিন আমার কোথায় হল লীন, কেবল ভাষাহারা অশ্রুধারায় আচ্ছা দাদাঠাকুর, তোমাকে আর কঁদতে হয় না ? তুমি যার কথা বল তিনি তোমার চোখের জল মুছিয়েছেন ? 通 দাদাঠাকুর । তিনি চোখের জল মোছান, কিন্তু চোখের জল ঘোচান না । পঞ্চক । কিন্তু দাদা, আমি তোমার ঐ শোণপাংশুদের দেখি আর মনে ভাবি, ওরা চোখের জল ফেলতে শেখে নি। ওদের কি তুমি একেবারেই কঁদাতে চাও না । r দাদাঠাকুর । যেখানে আকাশ থেকে বৃষ্টি পড়ে না। সেখানে খাল কেটে জল আনতে হয় । ওদেরও রসের দরকার হবে, তখন দূর থেকে বয়ে আনবে। কিন্তু দেখেছি। ওরা বর্ষণ চায় না, তাতে ওদের কাজ কামাই যায়, সে ওরা কিছুতেই সহ্য করতে পারে না, ঐরকমই ওদের স্বভাব । পঞ্চক । ঠাকুর, আমি তো সেই বর্ষণের জন্যে তাকিয়ে আছি। যতদূর শুকোবার তা শুকিয়েছে, কোথাও একটু সবুজ আর কিছু বাকি নেই, এইবার তো সময় হয়েছে— মনে হচ্ছে যেন দূর থেকে গুরু গুরু ডাক শুনতে পাচ্ছি। বুঝি এবার ঘন নীল মেঘে তপ্ত আকাশ জুড়িয়ে যাবে, ভরে যাবে। 5R नानार्टाकूद्ध। বুঝি এল, বুঝি এল, ওরে প্রাণ ! এবার ধর দেখি তোর গান । ঘাসে ঘাসে খবর ছোটে ধরা বুঝি শিউরে ওঠে, । দিগন্তে ওই স্তব্ধ আকাশ পেতে আছে কানি । পঞ্চক । ঠাকুর, আমার বুকের মধ্যে কী আনন্দ যে লাগছে সে আমি বলে উঠতে পারি নে। এই মাটিকে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা করে। ডাকো ডাকো, তোমার একটা ডাক দিয়ে এই আকাশ ছেয়ে ফেলো । 5R আজ যেমন করে গাইছে তেমনি করে গাও গো |