পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

8のVり রবীন্দ্র-রচনাবলী আর এমনি তাদের ভয়ানক উপকার হতে থাকবে যে, তারা এক পা নড়বে না। আমরা রাত্ৰিবেলাকার পাথরের মতো ঠাণ্ডা হয়ে বসে থাকব। " আর তারা আমাদের চার দিকে কুয়াশার মতো ঘন হয়ে জমবে। ও ভাই, আমাদের সর্দার এ-সব কথা শুনলে বলবে কী । ওরে, আমার ক্রমে বিশ্বাস হচ্ছে সর্দারই আমাদের ঠকিয়েছে। সে আমাদের মিথ্যে ফাকি দিয়ে খাটিয়ে নেয়, নিজে সে কুঁড়ের সর্দার । ফিরে চল রে । এবার সর্দারের সঙ্গে লড়ব । বলব, আমরা চলাব না— দুই পা কঁধের উপর মুড়ে বসব। পা দুটাে লক্ষ্মীছাড়া, পথে পথেই ঘুরে মরলে 1 । হাত দুটােকে পিছনের দিকে বেঁধে রাখব। পিছনের কোনো বালাই নেই রে, যত মুশকিল। এই সামনেটাকে নিয়ে। শরীরে যতগুলো অঙ্গ আছে তার মধ্যে পিঠটাই সত্যি কথা বলে। সে বলে চিত হয়ে পড়, চিত হয়ে পড়া । কঁচা বয়সে বুকটা বুক ফুলিয়ে চলে কিন্তু পরিণামে সেই পিঠের উপরেই ভর— পড়তেই হয় চিত হয়ে । গোড়াতেই যদি চিতপাত দিয়ে শুরু করা যেত তা হলে মাঝখানে উৎপাত থাকত না রে । আমাদের গ্রামের ছায়ার নীচে দিয়ে সেই যে ইরা নদী বয়ে চলেছে তার কথা মনে পড়ছে ভাই । সেদিন মনে হয়েছিল, সে বলছে, চল, চল, চল— আজি মনে হচ্ছে ভুল শুনেছিলুম, সে বলছে, छल, छल, छल । जश्नाला जबई छल (द्ध ! সে কথা আমাদের পণ্ডিত গোড়াতেই বলেছিল । এবারে ফিরে গিয়েই একেবারে সোজা সেই পণ্ডিতের চণ্ডীমণ্ডপে । পুঁথি ছাড়া আর এক পা চলা নয় । কী ভুলটাই করেছিলুম। ভেবেছিলুম চলাটাই বাহাদুরি । কিন্তু ন-চলাই যে গ্ৰহ নক্ষত্ৰ জল হাওয়া সমস্তর উলটো । সেটাই তো তেজের কথা হল । ওরে বীর, কোমর বাধা রে- আমরা চলাব না । ওরে পালোয়ান, তাল ঠুকে বসে পড়, আমরা চলাব না। 虫 চলচ্চিত্তং চলদ্বিত্তং- আমাদের চিত্তেও কাজ নেই, বিত্তেও কাজ নেই ; আমরা চলাব না | চলজজীবনযৌবনং- আমাদের জীবনও থাক, যৌবনও থাক, আমরা চলাব না। যেখান থেকে যাত্রা শুরু করেছি। ফিরে চল । না, রে, সেখানে ফিরতে হলেও চলতে হবে । তবে ? তবে আর কী । যেখানে এসে পড়েছি। এইখানেই বসে পড়ি । মনে করি এইখানেই বরাবর বসে আছি । জন্মাবার ঢের আগে থেকে । মারার ঢের পরে পর্যন্ত । ঠিক বলেছিস, তা হলে মনটা স্থির থাকবে। আর-কোথাও থেকে এসেছি জানলেই আর-কোথাও যাবার জন্যে মন ছটফট করে । আর-কোথাওটা বড়ো সর্বনেশে দেশ রে ! সেখানে দেশটা সুদ্ধ চলে। তার পথগুলো চলে । কিন্তু আমরা- |-