শব্দতত্ত্ব じの。 পরবর্তী বর্ণে যফলা থাকিলে পূর্ববতী প্ৰথম অক্ষরের অকার পরিবর্তিত হয়। গণ এবং গণ্য, কল এবং কল্য, পথ এবং পথ্য তুলনা করিলে ইহার দৃষ্টান্ত পাওয়া যাইবে । ফলত যফলা- ইকার এবং আকারের সংযোগমাত্র, অতএব ইহাকেও পূর্বনিয়মের অন্তর্গত করা যাইতে পারে।” ঋফলা-বিশিষ্ট বর্ণ পরে আসিলে তৎপূর্বের আকার ‘ও’ হয়। এ সম্বন্ধে কর্তা এবং কর্তৃ, ভর্তা এবং ভর্তু, বক্তা এবং বক্তৃতা তুলনাস্থলে আনা যায়। কিন্তু বাংলায় ঋফলা উচ্চারণে ই-কার যোগ করা হয়, অতএব ইহাকেও পূর্বনিয়মের শাখাস্বরূপে গণ্য করিলে দোষ হয় না।* V অপভ্রংশে পরবর্তী। ই অথবা উ লোপ হইলেও উক্ত নিয়ম বলবান থাকে ; যেমন হইল শব্দের অপভ্রংশে হ’ল, হউন শব্দের অপভ্রংশে হন। [ কিন্তু, হয়েন শব্দের অপভ্ৰংশ বিশুদ্ধ৷ ‘হন উচ্চারণ হয় । থলিয়া শব্দের অপভ্রংশে থলে, টকুয়া শব্দের অপভ্রংশে টাকো (অন্ন) । ক্ষা-র পূর্বেও অ ও হইয়া যায় ; যেমন, কক্ষ পক্ষ লক্ষ । ক্ষ-শব্দের উচ্চারণ বােধ করি এককালে ইকার-ঘেঁষা ছিল, তাই এই অক্ষরের নাম হইয়াছি ক্ষিয়। এখনো পূর্ববঙ্গের লোকেরা ক্ষ-র যফলা যোগ করেন ; এবং তঁহাদের দেশের যফলা উচ্চারণের প্রচলিত প্রথানুসারে পূর্ববতী বর্ণে ঐকার যোগ করিয়া দেন ; যেমন, তাহারা লক্ষ টাকা-কে বলেন- লৈক্ষ্য টাকা । . যাহা হউক, মোটের উপর এই নিয়মটিকে পাকা নিয়ম বলিয়া ধরা যাইতে পারে। যে দুই-একটা ব্যতিক্রম আছে, পূর্বে অন্যত্র তাহা প্রকাশিত হওয়াতে এ স্থলে তাহার উল্লেখ করিলাম না। দেখা যাইতেছে। ও-স্বরবর্ণের প্রতি বাংলা উচ্চারণের কিছু বিশেষ ঝোক আছে। প্রথমত, আমরা সংস্কৃত অ-র বিশুদ্ধ উচ্চারণ রক্ষা করি নাই। আমাদের অ, সংস্কৃত অ এবং ও-র মধ্যবতী। তাহার পরে আবার সামান্য ছুতা পাইলেই আমাদের অ সম্পূর্ণ ও হইয়া দাঁড়ায় । কতকগুলি স্বরবর্ণ আছে যাহাকে সন্ধিস্বর বলা যাইতে পারে ; যেমন, অ এবং উ-র মধ্যপথে-ও, অ এবং ই-র সেতুস্বরূপএ ; যখন এক পক্ষে ই অথবা এ এবং অপর পক্ষে আ, তখন অ্যা তাহাদের মধ্যে বিরোধভঞ্জন করে । বোধ হয় ভালো করিয়া সন্ধান করিলে দেখা যাইবে, বাঙালিরা উচ্চারণকালে এই সহজ সন্ধিস্বরগুলির প্রতিই বিশেষ মমত্ব প্ৰকাশ করিয়া থাকে । अशोंp S २०२ স্বরবর্ণ এ বাংলায় ‘এ’ স্বরবর্ণ আদ্যক্ষরস্বরূপে ব্যবহৃত হইলে তাহার দুই প্রকার উচ্চারণ দেখা যায়। একটি বিশুদ্ধ এ, আর-একটি অ্যা। এক এবং একুশ শব্দে তাহার প্রমাণ পাওয়া যায়। একারের বিকৃত উচ্চারণ বাংলায় অধিকাংশ স্থলেই দেখা যায় ; কেবল এ সম্বন্ধে একটি পাকা নিয়ম খুব দৃঢ় করিয়া বলা যায় - পরে ইকার অথবা উকার থাকিলে তৎপূর্ববতী একারের কখনোই বিকৃতি হয় না। জেঠা এবং জেষ্ঠী, বেটা এবং বেটী, একা এবং একটু— তুলনা করিয়া দেখিলে ইহার শ্ৰীমাণ হইবে । এ নিয়মের একটিও ব্যতিক্রম আছে বলিয়া জানা যায় নাই । ১ যফলা যেমন ই এবং অ-র সংযোগ, বফলা তেমনই উ এবং অ-র সংযোগ, অতএব তৎসম্বন্ধেও বােধ করি পূর্বনিয়ম খাটে। কিন্তু বিফলার উদাহরণ অধিক পাওয়া যায় না, যে-দুয়েকটি মনে পড়িতেছে তাহাতে আমাদের *ৰ্থী সপ্রমাণ হইতেছে ; মাথা, অন্বেষণ ধন্বন্তরি মন্বন্তর। কাজল সত্ত্ব প্রভৃতি শব্দে প্ৰথম অক্ষর এবং বিফলার মধ্যে দুই অক্ষর পড়াতে ইহাকে ব্যতিক্রমের দৃষ্টান্তস্বরূপে উল্লেখ করা যায় না। : ২ মহারাষ্ট্ৰীয়েরা ঋ উচ্চারণে উকারের আভাস দিয়া থাকেন। আমরা প্রকৃতি-কে কতকটা প্রক্রিতি বলি,