পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

)Wり総パー זeןזצףס || 883ף যায় সংস্কৃত ও য়ুরোপীয় ভাষায় লাঙ্গলের নামের সাদৃশ্য আছে। তবে স্থির করা যায় যে, আর্যগণ বিচ্ছিন্ন হইবার পূর্বেই চাষ আরম্ভ করিয়াছিলেন, তেমনই যদি দেখা যায় কোনো-একটা বস্তুর নাম উভয় ভাষায় পৃথক তবে অনুমান করা যাইতে পারে যে, ভিন্ন হইবার পরে তৎসম্বন্ধে তাঁহাদের পরিচয় ঘটিয়াছে। সেই যুক্তি অবলম্বন করিয়া বেনফি বলেন, সংস্কৃত ভাষায় সিংহ শব্দ যে-ধাতু হইতে উৎপন্ন হইয়াছে সে—ধাতু য়ুরোপীয় কোনো ভাষায় নাই। অপর পক্ষে গ্ৰীকগণ সিংহের নাম হিব্রুভাষা হইতে ধার করিয়া লইয়াছেন- গ্ৰীক লিস, হিব্রু লাইশ । অতএব এ কথা বলা যাইতে পারে যে, আর্যগণ একত্ৰ থাকিবার সময় সিংহের পরিচয় পান নাই। সম্ভবত গ্ৰীক লিস ও লিওন শব্দের ন্যায় সংস্কৃত সিংহ শব্দও তৎকালীন কোনো অনার্য ভাষা হইতে সংগৃহীত । অথবা পশুরাজের গর্জনের অনুকরণেও নূতন নামকরণ অসম্ভব নহে। যাহাই হউক, এশিয়াই যদি আৰ্যদিগের আদিম নিবাস হইত। তবে সিংহ শব্দের ধাতু য়ুরোপীয় আর্যভাষাতেও পাওয়া যাইত। উষ্ট হন্তী এবং ব্যাঘ্র শব্দ সম্বন্ধেও এই কথা খাটে । এ দিকে আবার মানবতত্ত্ববিৎ পণ্ডিতেরা বলিয়াছেন, শ্বেতবর্ণ মানবেরা একটি বিশেষজাতীয় এবং এই-জাতীয় মানব যুরোপেই দেখা যায়, এশিয়ায় নহে। প্রাচীন বৰ্ণনা এবং বর্তমান দৃষ্টান্ত দ্বারা জানা যায় যে, আদিম আর্যগণ শ্বেতাঙ্গ ছিলেন এবং বর্তমান আর্যদের অধিকাংশই শ্বেতবর্ণ। অতএব য়ুরোপেই এই শ্বেতজাতীয় মনুষ্যের উৎপত্তি অধিকতর সংগত বলিয়া বিবেচনা হয় । লিন্ডেনস্মিট বলেন, ভাষার ঐক্য ধরিয়া যে-সমস্ত জাতিকে আর্য-নামে অভিহিত করা হইতেছে মস্তকের গঠন ও শারীরিক পরিণতি অনুসারে তাহদের আদিম আদর্শ যুরোপেই দেখা যায়। য়ুরোপীয়দের শারীরিক প্রকৃতি, দীর্ঘ জীবন এবং দুর্ধর্ষ জীবনীশক্তি পর্যালোচনা করিয়া দেখিলেই বুঝা যাইবে, আর্যজাতির প্রবলতম প্রাচীনতম এবং গভীরতম মূল কোথায় পাওয়া যাইতে পারে। র্তাহার মতে, ভারতবর্ষে ও এশিয়ার অন্যত্র আর্যগণ তত্ৰস্থ আদিম অধিবাসীদের সহিত অনেক পরিমাণে মিশ্রিত হইয়া সংকর জাতিতে পরিণত হইয়াছে । যুরোপের উত্তরাঞ্চলবাসী ফিনজাতি আর্যজাতি নহে। ভাষাতত্ত্ববিৎ কুনো সাহেব দেখাইয়াছেন, ফিনভাষার বহুতর সংখ্যাবাচক শব্দ, সর্বনাম শব্দ, এবং পারিবারিক সম্পর্কের নাম ইন্ডোয়ুরোপীয় ধাতু হইতে উৎপন্ন। তাহার মতে এ-সকল শব্দ যে ধার করিয়া লওয়া তাহা নহে ; কোনো-এক সময়ে অতি প্রাচীনকালে উক্ত দুই জাতির পরস্পরসামীপ্যবশত কতকগুলি শব্দ ও ধাতু উভয়েরই সরকারি দখলে ছিল। ইহা হইতেও প্রমাণ হয় যুরোপেই আর্যগণের আদিম বাসস্থান, সুতরাং ফিনজাতি তাহাদের প্ৰতিবেশী ছিল । ইতিমধ্যে আবার একটা নূতন কথা অল্পে অল্পে দেখা দিতেছে, সেটা যদি ক্রমে পাকিয়া দাঁড়ায় তবে আবার প্রাচীন মতই বহাল থাকিবার সম্ভাবনা । সেমেটিক জাতি (আরব্য ইহুদি প্রভৃতি জাতিরা যাহার অন্তর্গত) আর্যজাতির দলভুক্ত নয়, এতকাল এই কথা শুনিয়া আসিতেছিলাম। কিন্তু আজকাল দুই-একজন করিয়া পুরাতত্ত্ববিৎ কোনো কোনো সেমেটিক শব্দের সহিত আৰ্যশব্দের সাদৃশ্য বাহির করিতেছেন । এবং কেহ কেহ এরূপ অনুমান করিতেছেন যে, সেমেটিকগণ হয়তো এককালে আর্যজাতির অন্তর্ভুক্ত ছিল ; সর্বাগ্রে তাহারাই বিচ্ছিন্ন হইয়া গিয়াছিল, এইজন্য তাঁহাদের সহিত অবশিষ্ট আর্যগণের সাদৃশ্য ক্রমশই ক্ষীণতর হইয়া আসিয়াছে। আর্যদিগের সহিত সেমেটিকদের সম্পর্ক স্থির হইয়া গেলে আদিমকালে উভয়ের একত্র এশিয়া-বাসই অপেক্ষাকৃত সংগত বলিয়া মনে হইতে পারে। কিন্তু এ মত এখনো পরিস্ফুট হয় নাই, অনুমানের মধ্যেই আছে। - আমরা বলি, আদিম বাসস্থান যেখানেই থাক, কুটুম্বিতা যতই বাড়ে ততই ভালো। এই এক আৰ্যসম্পর্কে পৃথিবীর অনেক বড়ো বড়ো জাতির সঙ্গে আমাদের সম্বন্ধ বাধিয়াছে। আরবিক ও ইহুদিরা কম লোক নহে। তাহারা যদি জাতভাই হইয়া দাড়ায় সে তো সুখের বিষয় । বর্ণিত আছে যে, দ্ৰৌপদী কর্ণকে দেখিয়া মনে করিতেন- যখন আমার সে-ই পঞ্চস্বামীই হইল, তখন কৰ্ণকে সুদ্ধ ধরিয়া ছয় স্বামী হইলেই মনের খেদ মিটিত ; তাহা হইলে পৃথিবীতে আমার স্বামীর তুলনা মিলিত না।