পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষষ্ঠ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাবছিলুম উঠোনে স্টেজ না করে আটচালা বেঁধে তোমাদের দক্ষিণের আঙিনায় স্টেজ করলে কেমন হয় । এখন থেকেই সাজাতে পার- গাছপালা পোতা সহজ হয়, হয়তো seats বেশি ধরতে পারে, সামনের রোয়াকে এবং দোতলায় মেয়েদের জায়গা করা যায়, ইত্যাদি সুবিধা আছে । হােগলার চাল করলে একপশলা বৃষ্টিও কেটে যেতে পারে । কাপড়ের কী করলে । আমার জন্যে যে সাদা ঝোলা করবে তার হাতের আস্তিনটা খুব ঝোলানো করতে হবে- মসলিনের কাপড় হলে সাদাটা বেশ খুলবে। ভালো । মেয়ে যারা থাকবে, তাদের পেশোয়াজ গোছের সাজেই বোধ হয় মানাবে। কী বল ।-- ব্যস্ত আছি। বৈকুণ্ঠের খাতার তালিমটা যেন ভালোরকম দেওয়া হয়- প্ৰমপটিঙের উপরেই | কান পেতে থেকে না— ভালো মুখস্থ না হলে জমে না । মুশকিল, আমি ওখানে নেইথাকলে জবরদস্তি করে খাড়া করে তুলতে পারতুম | G আমিও সে-কথা ভাবছিলুম। বৈকুণ্ঠের খাতার সঙ্গে ফাঙ্গুনীকে জুড়ে দিলে বডড বড়ো হবে। তা ছাড়া দুটাের মধ্যে মিল থাকবে না। তাই ভাবছি, ফাঙ্গুনীরই একটা introduction গোছের scene জুড়ে দেব- সেটা ছোটাে হবে, তাতে মেয়ে থাকবে না, আর যারা দেরিতে আসবে তাদের disturbance-টা ঐটের উপর দিয়েই যাবে । এটা রাজা ও রাজসভাসদদের ব্যাপার হবে । একটু কাপড়াচোপড় হয়তো বেড়ে যাবে- কিন্তু এর অভিনয় তোমাদেরই ঘাড়ে ফেলব । কাল থেকে লিখতে শুরু করব...।-- তোমরাই শুধু ব্যস্ত আছ তা নয়- আমরাও ভয়ানক ব্যস্ত । তোমাকে চিঠি লিখছি যেন স্বপ্নে লিখছি— মনটা কোথায় বিক্ষিপ্ত হয়ে আছে বলতে পারি। নে । * - একা ফাল্গুনীতেই যাতে আগুন জ্বলে ওঠে। সেই চেষ্টা করা যাবে । তোমরা stage effect জমাবার ভারটা নিয়ো- আমরা গানে ও অভিনয়ে আছি । ইংরেজি synopsis-টা পড়লে বুঝতে পারবে ছেলেদের কাকে কী রকম সাজাতে হবে । বেণুবন, পাখি, ফুটন্ত চাপা, বকুল, পারুল, আমের বোল, শালের কচি পাতা ইত্যাদি । ফাল্গুনীর আরম্ভে বহুবিবাহ (বশীকরণ) প্ৰহসন সংযোজনের যে-প্ৰস্তাব এই পত্রগুলিতে উল্লিখিত আছে সুহৃৎকুমার মুখোপাধ্যায় সৌজন্যে প্রাপ্ত রবীন্দ্রনাথ-কৃত তাহার খসড়া “অভিনয়সূচি ঃপর মুদ্রিত হইল । অভিনয়সূচি বহুবিবাহ প্ৰহসন কেমন করিয়া একটিকে লইয়াই বহুবিবাহ ঘটিতে পারে এই প্রহসনে তাহাঁই প্ৰমাণিত হইয়াছে । প্ৰথম দৃশ্য ; আশুর বাড়ি অন্নদা স্ত্রী-সত্ত্বেও দৈবদুৰ্যোগে শ্ৰীহারা । তিনি আশুর সহিত দ্বিতীয় স্ত্রী-সন্ধানের আলোচনায় রত । ৪৯ নম্বরের রামবৈরাগীর গলিতে পশ্চিম হইতে এক বিধবা তাহার বিবাহযোগ্য কুমারী কন্যা মনোরমার যোগ্য পাত্র খুঁজিতেছেন । তাহাকে দেখিতে যাইবার পরামর্শ । কুমারব্রাতধারী আশু যোগবিদ্যা চান, তিনি স্ত্রী চান না । তাহার অনুবতী রাধাচরণ সংবাদ দিল যে, মস্ত্ৰে তন্ত্রে সিদ্ধা মাতাজি ২২ নম্বর ভেড়াতলায় যোগবিদ্যা দান করিবার যোগ্য পাত্ৰ খুজিতেছেন । অন্নদা কন্যার সন্ধানে চলিল ৪৯ নম্বরে, আশু যোগবিদ্যার সন্ধানে - চলিল ২২ নম্বরে । ।