১২৬
রবীন্দ্র-রচনাবলী
মশালের আলোয় ছায়ায় তাদের মুখে বিভীষিকার উল্কি পরানো ।
কোনো এক সময়ে অকারণ সন্দেহে কোনো-এক পাগল তার প্রতিবেশীকে হঠাৎ মারে ; n দেখতে দেখতে নির্বিচার বিবাদ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে দিকে দিকে । কোনো নারী আর্তম্বরে বিলাপ করে ; বলে, হায়, হায়, আমাদের দিশাহারা সস্তান উচ্ছন্ন গেল । কোনো কামিনী যৌবনমদবিলসিত নগ্ন দেহে অট্টহাস্য করে ; বলে, কিছুতে কিছু আসে যায় না।
२
উর্ধ্বে গিরিচূড়ায় বসে আছে ভক্ত, তুষারশুভ্ৰ নীরবতার মধ্যে ; আকাশে তার নিদ্রাহীন চক্ষু খোজে আলোকের ইঙ্গিত। মেঘ যখন ঘনীভূত, নিশাচর পাখি চীৎকারশব্দে যখন উড়ে যায়, সে বলে, ভয় নেই ভাই, মানবকে মহান বলে জেনে । ওরা শোনে না, বলে পশুশক্তিই আদ্যশক্তি, বলে পশুই শাশ্বত ; বলে সাধুতা তলে তলে আত্মপ্রবঞ্চক। যখন ওরা আঘাত পায় বিলাপ করে বলে, ভাই, তুমি কোথায় । উত্তরে শুনতে পায়, আমি তোমার পাশেই ।
অন্ধকারে দেখতে পায় না, তর্ক করে— এ বাণী ভয়ার্তের মায়াহষ্টি, আত্মসাত্বনার বিড়ম্বন ।
বলে, মানুষ চিরদিন কেবল সংগ্রাম করবে মরীচিকার অধিকার নিয়ে
হিংসাকণ্টকিত অস্তহীন মরুভূমির মধ্যে ।
NC)
মেঘ সরে গেল । শুকতারা দেখা দিল পূর্বদিগন্তে, পৃথিবীর বক্ষ থেকে উঠল আরামের দীর্ঘনিশ্বাস,
পল্লবমর্মর বনপথে-পথে হিল্লোলিত, পাথি ডাক দিল শাখায়-শাখায় ।
পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৩৬
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
