পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

১৩৮ রবীন্দ্র-রচনাবলী আরো এক রাত যায়। কৃষ্ণপক্ষের চাদ ডুবেছে অমাবস্তার তলায়। আঁধারের ডাক কী গভীর । পথ-না-জানা যত-সব গুহা-গহবর মনের মধ্যে প্রচ্ছন্ন এই ডাক সেখানে গিয়ে প্রতিধ্বনি জাগায়। সেই অস্ফুট আকাশবাণীর সঙ্গে মিলে ঐ যে বাজে বীণায় কানাড়া। রাজমহিষী উঠে দাড়িয়ে বললে, ‘আজ আমি যাব। আমার চোখকে আমি আর ভয় করি নে ? পথের শুকনো পাত পায়ে পায়ে বাজিয়ে দিয়ে সে গেল পুরাতন অশথ গাছের তলায়। বীণা থামল । মহিষী থমকে দাড়ালে । রাজা বললে, ‘ভয় কোরো না প্রিয়ে, ভয় কোরো না ।” তার গলার স্বর জলে-ভরা মেঘের দূর গুরু-গুরু ধ্বনির মতো। ‘আমার কিছু ভয় নেই, তোমারই জয় হল ? এই বলে মহিষী আঁচলের আড়াল থেকে প্রদীপ বের করলে, ধীরে ধীরে তুললে রাজার মুখের কাছে। কণ্ঠ দিয়ে কথা বেরোতে চায় না, পলক পড়ে না চোখে । বলে উঠল, ‘প্রভু আমার, প্রিয় আমার, এ কী সুন্দর রূপ তোমার।’ ছুটি - WS-F ছুটি, কেমন করে বুঝিয়ে বলি কোনখানে । যেখানে ঐ শিরীষ-বনের গন্ধপথে মৌমাছিদের কাপছে ডানা সারাবেলা । যেখানেতে মেঘ-ভাসা ঐ স্থদুরতা, জলের প্রলাপ যেখানে প্রাণ উদাস করে পৌষ ১৩৩৮