পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিরকুমার-সভা Ꮌ© ☾ শৈলবালা । ওই তো দশ নম্বরে ওদের সভা ? আমাদের ছাদের উপর দিয়ে দেখন-হাসির বাড়ি পেরিয়ে ওখানে ঠিক যাওয়া যাবে। আমি পুরুষবেশে ওদের সভার সভ্য হব, তার পরে সভা কতদিন টেকে আমি দেখে নেব । অক্ষয় । তা হলে জন্মট বদলে নিয়ে আর-একবার সভ্য হব। একবার তোমার দিদির হাতে নাকাল হয়েছি, এবার তোমার হাতে। কুমার হবার সুখটাই ওই— কটাক্ষবাণগুলোকে লক্ষ্যভেদ করবার সুযোগ দেওয়া যায়। শৈলবালা। ছি মুখুজ্জেমশায়, তুমি সেকেলে হয়ে যাচ্ছ। ওই-সব নয়নবাণ-টানগুলোর এখন কি আর চলন আছে। যুদ্ধবিদ্যার যে এখন অনেক বদল হয়ে গেছে। নৃপবালা ও নীরবালার প্রবেশ নৃপ শান্ত স্নিগ্ধ, নীর তাহার বিপরীত— কৌতুকে এবং চাঞ্চলে সে সর্বদাই আন্দোলিত নীরবালা । ( শৈলকে জড়াইয়া ধরিয়া ) মেজদিদিভাই, আজ কারা আসবে বল তো । নৃপবালা । মুখুজ্জেমশায়, আজ কি তোমার বন্ধুদের নিমন্ত্রণ আছে। জলখাবারের আয়োজন হচ্ছে কেন । অক্ষয়। ওই তো ! বই পড়ে পড়ে চোখ কানা করলে— পৃথিবীর আকর্ষণে উল্কাপাত কী করে ঘটে সে সমস্ত লাখ-জুলাখ ক্রোশের খবর রাখ, আর আজ ১৮ নম্বর মধুমিস্ত্রির গলিতে কার আকর্ষণে কে এসে পড়ছে সেটা অনুমান করতেও পারলে না ? নীরবালা । বুঝেছি ভাই সেজদিদি। তোর বর আসছে ভাই, তাই সকালবেল আমার বা চোখ নাচছিল । ஆ নৃপবালা । তোর বা চোখ নাচলে আমার বর আসবে কেন । নীরবালা । তা ভাই, আমার বা চোখট নাহয় তোর বরের জন্যে নেচে নিলে, তাতে আমি দুঃখিত নই। কিন্তু মুখুজ্জেমশায়, জলখাবর তো দুটি লোকের জন্তে দেখলুম, সেজদিদি কি স্বয়ম্বর হবে নাকি । ஆம்டி অক্ষয় । আমাদের ছোড়দিদিও বঞ্চিত হবেন না । নীরবালা । আহা মুখুজ্জেমশায়, কী মুসংবাদ শোনালে। তোমাকে কী বকশিশ দেব। এই নাও আমার গলার হার, আমার দু হাতের বালা । শৈলবালা । আঃ ছি, হাত খালি করিস নে । -- নীরবালা। আজ আমাদের বরের অনারে পড়ার ছুটি দিতে হবে মুখুজ্জেমশায়। নৃপবালা। আঃ, কী বর বর করছিস । দেখো তো ভাই মেজদিদি ।