পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্র-রচনাবলী به هلا বিপিন। ওই শুনলে না বললে— এ পারেতে ধুধু মরু বারি বিনা রে’ ? পূর্ণ। তা হলে আর দেরি কেন। পারে যাবার জোগাড় করে । শ্ৰীশ । গলাটা শুনে বোধ হচ্ছে পারে নিয়ে যাবে না, অতলে তলিয়ে দেবে। [ সকলের প্রস্থান দ্বিতীয় দৃশ্য শ্ৰীশের বাস৷ শ্ৰীশ তাহার বাসার দক্ষিণের বারান্দায় একখানা বড়ো হাতীওআল। কেদারার দুই হাতার উপর দুই পা তুলিয়া দিয়া শুরুসন্ধ্যায় চুপচাপ বসিয়া সিগারেট ফুকিতেছিল। পাশে টিপায়ের উপর রেকাবিতে একটি গ্লাসে বরফ-দেওয়া লেমনেড ও স্ত পাকার কুন্দযুলের মাল৷ বিপিনের প্রবেশ বিপিন। কী গো সন্ন্যাসীঠাকুর। শ্ৰীশ । ( উঠিয়া বসিয়া উচ্চৈঃস্বরে হাসিয়া ) এখনও বুঝি ঝগড়া ভুলতে পার নি ? আচ্ছা ভাই শিশুপালক, তুমি কি সত্যি মনে কর আমি সন্ন্যাসী হতে পারি নে। বিপিন। কেন পারবে না। কিন্তু অনেকগুলি তল্পিদার চেলা সঙ্গে থাকা চাই । শ্ৰীশ । তার তাৎপর্য এই যে, কেউ বা আমার বেলফুলের মালা গেঁথে দেবে, কেউ বা বাজার থেকে লেমনেড ও বরফ ভিক্ষে করে আনবে, এই তো ? তাতে ক্ষতিটা কী । যে সন্ন্যাসধর্মে বেলফুলের প্রতি বৈরাগ্য এবং ঠাণ্ড লেমনেডের প্রতি বিতৃষ্ণা জন্মায় সেটা কি খুব উচু দরের সন্ন্যাস। বিপিন । সাধারণ ভাষায় তো সন্ন্যাসধর্ম বলতে সেই রকমটাই বোঝায়। শ্ৰীশ। ওই শোনো, তুমি কি মনে কর ভাষায় একটা কথার একটা বৈ অর্থ নেই । একজনের কাছে সন্ন্যাসী কথাটার যে অর্থ আর-একজনের কাছেও যদি ঠিক সেই অর্থই হয়, তা হলে মন বলে একটা স্বাধীন পদার্থ আছে কী করতে । বিপিন । তোমার মন সন্ন্যাসী কথাটার কী অর্থ করছেন আমার মন সেইটি শোনবার জন্ত উংস্থক হয়েছেন । শ্ৰীশ । আমার সন্ন্যাসীর সাজ এইরকম— গলায় ফুলের মালা, গায়ে চন্দন, কানে কুগুল, মুখে হাস্য । আমার সন্ন্যাসীর কাজ মানুষের চিত্ত-অাকর্ষণ। স্বন্দর চেহারা, মিষ্টি গলা, বক্তৃতায় অধিকার, এ-সমস্ত না থাকলে সন্ন্যাসী হয়ে উপযুক্ত ফল পাওয়া