পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

는 রবীন্দ্র-রচনাবলী অক্ষয়ের প্রবেশ । অক্ষয় । অন্তকার সভায় বিদুষীমণ্ডলীকে একটি ঐতিহাসিক প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে ইচ্ছা করি । শৈলবালা । প্রস্তুত আছি । অক্ষয়। বলে দেখি যে দুটি ডালে দাড়িয়েছিলেন সেই দুটি ডাল কাটতে চেয়েছিলেন কে । নৃপবালা। আমি জানি মুখুজ্জেমশায়, কালিদাস । অক্ষয়। না, আরও একজন বড়োলোক। শ্ৰীঅক্ষয়কুমার মুখোপাধ্যায়। নীরবাল । ডাল দুটি কে । অক্ষয় । ( বামে নীরকে টানিয়া ) এই একটি (দক্ষিণে নৃপকে টানিয়া আনিয়া ) এই আর-একটি । নীরবালা। আর, কুডুল বুঝি আজ আসছে ? অক্ষয়। আসছে কেন, এসেছে বললেও অত্যুক্তি হয় না। ওই-যে সিড়িতে পায়ের শব্দ শোনা যাচ্ছে । দৌড় দৌড়। শৈল পালাইবার সময় রসিকদাদাকে টানিয়া লইয়া গেল চুড়িবালার ঝংকার এবং ত্রস্ত পদপল্লবকয়েকটির দ্রুতপতনশব্দ সম্পূর্ণ না মিলাইতেই শ্রীশ ও বিপিনের প্রবেশ অক্ষয়। পূর্ণবাবু এলেন না যে ? শ্ৰীশ । চন্দ্রবাবুর বাসায় তার সঙ্গে দেখা হয়েছিল, কিন্তু হঠাৎ তার শরীরটা খারাপ হয়েছে বলে আজ আর আসতে পারলেন না । অক্ষয় । ( পথের দিকে চাহিয়া ) একটু বস্থন, আমি চন্দ্রবাবুর অপেক্ষায় দ্বারের কাছে গিয়ে দাড়াই । তিনি অন্ধ মানুষ, কোথায় যেতে কোথায় গিয়ে পড়বেন তার ঠিক নেই। কাছাকাছি এমন স্থানও আছে যেখানে কুমারসভার অধিবেশন কোনো মতেই প্রার্থনীয় নয়। [ অক্ষয়ের প্রস্থান অক্ষয় চলিয়৷ গেলে ঘরটি ঐশ ভালো করিয়া দেখিয়া লইল। ঘরে দুটি দীপ জ্বলিতেছে সেই দুটিকে বেষ্টন করিয়া ফিরোজ রঙের রেশমের অবগুণ্ঠন। সেই আবরণ ভেদ করিয়া ঘরের আলোটি মৃদ্ধ এবং রঙিন হইয়। উঠিয়াছে। টেবিলের মাঝখানে ফুলদানিতে ফুল সাজানে৷ বিপিন। ( ঈষৎ হাসিয়া ) যা বল ভাই, এ ঘরটি চিরকুমার-সভার উপযুক্ত নয়।