পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিরকুমার-সভা ` २२१ চেয়ে রই রাতের আকাশ-পানে, মন যে কী চায় তা মনই জানে! আশা জাগে কেন অকারণে আমার মনে ক্ষণে ক্ষণে— ব্যথার টানে তোমায় আনবে দ্বারে । নেপথ্যে | অবলাকাস্তবাবু আছেন ? বিপিন ঘরে প্রবিষ্ট ও সচকিত হইয়া দণ্ডায়মান নীরবালা মুহূত হতবুদ্ধি হইয়া দ্রুতবেগে বহিস্ক্রান্ত শৈলবালা। আস্থন বিপিনবাবু। বিপিন। ঠিক করে বলুন, আসব কি। আমি আসার দরুন আপনাদের কোনোরকম লোকসান নেই ? রসিক। ঘর থেকে কিছু লোকসান না করলে লাভ হয় না বিপিনবাবু, ব্যাবসার এই রকম নিয়ম । যা গেল তা আবার জুনো হয়ে ফিরে আসতে পারে, কী বল অবলাকান্ত। শৈলবালা রসিকদাদার রসিকতা আজকাল একটু শক্ত হয়ে আসছে। রসিক। গুড় জমে যেরকম শক্ত হয়ে আসে। কিন্তু, বিপিনবাবু কী ভাবছেন বলুন দেখি । * বিপিন । ভাবছি কী ছুতো করে বিদায় নিলে আমাকে বিদায় দিতে আপনাদের ভদ্রতায় বাধবে না | শৈলবালা । বন্ধুত্বে যদি বাধে ? বিপিন। তা হলে ছুতে খোজবার কোনো দরকারই হয় না। . শৈলবালা। তবে সেই খোজটা পরিত্যাগ করুন, ভালো হয়ে বস্থন । । রসিক। মুখখানা প্রসন্ন করুন বিপিনবাৰু। আমাদের প্রতি ঈর্ষা করবেন না। আমি তো বৃদ্ধ যুবকের ঈর্ষার যোগ্যই নই। আর, আমাদের মুকুমারমূর্তি অবলাকাস্তবাবুকে কোনো স্ত্রীলোক পুরুষ বলে জ্ঞানই করে না। আপনাকে দেখে যদি কোনো সুন্দরী কিশোরী ত্রস্তহরিণীর মতে পলায়ন করে থাকেন তা হলে মনকে এই বলে সান্ধনা দেবেন যে, তিনি আপনাকে পুরুষ বলেই মস্ত খাতিরটা করেছেন। হায় রে হতভাগ্য রসিক, তোকে দেখে কোনো তরুণী লজ্জাতে পলায়নও করে না । বিপিন। রসিকবাবু আপনাকেও যে দলে টানছেন অবলাকাস্তবাবু। এ কিরকম হল। J