পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৪১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিরকুমার-সভা ఫిలరీ পুড়িবে বলিয়া রয়েছে আশায় আমার নীরব হিয়া আপন আঁধার নিয়া । নিশি না পোহাতে জীবনপ্রদীপ জালাইয়া যাও প্রিয়া । পূর্ণ। ওহে শ্ৰীশবাবু, তোমার কবিটি তো মন্দ লেখে নি— নিশি না পোহাতে জীবনপ্রদীপ জালাইয়া যাও প্রিয়া । ঘরটি সাজানো রয়েছে— থালায় মালা, পালঙ্কে পুষ্পশয্যা, কেবল জীবনপ্রদীপটি জলছে না, সন্ধ্যা ক্রমে রাত্রি হতে চলল। বাঃ, দিব্যি লিখেছে। কোন বইটাতে আছে বলে। দেখি । শ্ৰশ । বইটার নাম ‘আবাহন’ । পূর্ণ। নামটাও বেছে বেছে দিয়েছে ভালো । ( আপন মনে )— নিশি না পোহাতে জীবনপ্রদীপ জালাইয়া যাও প্রিয়া । ( দীর্ঘনিশ্বাস ) ஆ তোমরা কি বাড়ির দিকে চলেছ । শ্ৰীশ । বাড়ি কোন দিকে ভুলে গেছি ভাই । পূর্ণ। আজ পথ ভোলবার মতোই রাতটা হয়েছে বটে। কী বল বিপিনবাবু। শ্ৰীশ। বিপিনবাবু এ-সকল বিষয়ে কোনো কথাই কন না, পাছে ওঁর ভিতরকার কবিত্ব ধরা পড়ে । কৃপণ যে জিনিসটার বেশি আদর করে সেইটেকেই মাটির নীচে পুতে রাখে। বিপিন। অস্থানে বাজে খরচ করতে চাই নে ভাই, স্থান খুজে বেড়াচ্ছি। মরতে হলে একেবারে গঙ্গার ঘাটে গিয়ে মরাই ভালো । পূর্ণ। এ তো উত্তম কথা, শাস্ত্রসংগত কথা। বিপিনবাবু একেবারে অস্তিম কালের জন্যে কবিত্ব সঞ্চয় করে রাখছেন, যখন অন্যে বাক্য কবেন কিন্তু উনি রবেন নিরুত্তর । আশীৰ্বাদ করি অন্যের সেই বাক্যগুলি যেন মধুমাখা হয়— শ্ৰীশ । এবং তার সঙ্গে যেন কিঞ্চিৎ ঝালের সম্পর্কও থাকে— বিপিন। এবং বাক্যবর্ষণ করেই যেন মুখের সমস্ত কর্তব্য নিঃশেষ না হয়— পূর্ণ। বাক্যের বিরামস্থলগুলি যেন বাক্যের চেয়ে মধুমত্তর হয়ে ওঠে— শ্ৰীশ । সেদিন নিদ্রা যেন না আসে— {...}. ১৬|| ১৬