পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*も8 রবীন্দ্র-রচনাবলী শ্ৰীশ । তা হলে তদণ্ডেই তিনি অরসিক বলে প্রমাণ হয়ে যাবেন। রসিক । এবং পরদণ্ডেই পরমানন্দে কালযাপন করতে থাকবেন । তা, আমি ঈর্ষা করতে চাই নে শ্ৰীশবাবু। আমার ভাগ্যে যিনি আসতে বহু বিলম্ব করলেন আমি তাকে তোমাদের উদ্দেশেই উৎসর্গ করলুম। দেবী, তোমার বরমাল্য গেঁথে আনো। আজ বসন্তের শুক্লরজনী, আজ অভিসারে এসো।– মন্দং নিধেহি চরণে পরিধেহি নীলং বাসঃ পিধেহি বলয়াবলিমঞ্চলেন । ম। জল্প সাহসিনি শারদচন্দ্রকান্তদস্তাংশবস্তব তমাংসি সমাপয়ন্তি । ধীরে ধীরে চলে। তন্ত্রী, পরো নীলাম্বর, অঞ্চলে বাধিয়া রাখে। কঙ্কণ মুখর। কথাটি কোয়ে না, তব দন্ত-অংশু-রুচি পথের তিমিররাশি পাছে ফেলে মুছি। শ্ৰীশ। রসিকবাবু, আপনার ঝুলি যে একেবারে ভরা। এমন কত তর্জমা করে রেখে ছেন । রসিক। বিস্তর। লক্ষ্মী তো এলেন না, কেবল বাণীকে নিয়েই দিন যাপন করছি। শ্ৰীশ । ওহে বিপিন, অভিসার-ব্যাপারটা কল্পনা করতে বেশ লাগে । বিপিন। ওটা পুনর্বার চালাবার জন্যে চিরকুমার-সভায় একটা প্রস্তাব এনে দেখে-না । শ্ৰীশ। কতকগুলো জিনিস আছে যার আইডিয়াটা এত সুন্দর যে সংসারে সেটা চালাতে সাহস হয় না। যে রাস্তায় অভিসার হতে পারে, যেখানে কামিনীদের হার থেকে মুক্তে ছিড়ে ছড়িয়ে পড়ে, সে রাস্তা কি তোমার পটলডাঙা স্ট্রট । সে রাস্ত জগতে কোথাও নেই। বিরহিণীর হৃদয় নীলাম্বর পরে মনোরাজ্যের পথে ওই রকম করে বেরিয়ে থাকে— বক্ষের উপর থেকে মুক্তো ছিড়ে পড়ে, চেয়েও দেখে না— সত্যিকার মুক্তে হলে কুড়িয়ে নিত। কী বলেন রসিকবাবু। রসিক । সে কথা মানতেই হয়— অভিসারটা মনে মনেই ভালো, গাড়িঘোড়ার রাস্তায় অত্যন্ত বেমানান। আশীৰ্বাদ করি শ্ৰীশবাবু, এই রকম বসন্তের জ্যোৎস্নারাত্রে কোনো-একটি জালনা থেকে কোনো-এক রমণীর ব্যাকুল হৃদয় তোমার বাসার দিকে যেন অভিসারে যাত্রা করে । ঐশ । তা করবে রসিকবাবু, আপনার আশীৰ্বাদ ফলবে। আজকের হাওয়াতে