চিরকুমার-সভা २९ >
বিপিন ( রসিককে জনাস্তিকে টানিয়া ) দুই বীরপুরুষে যুদ্ধ চলুক, এখন আস্থন রসিকবাবু, আপনার সঙ্গে দুই-একটা কথা আছে। দেখুন, সেই খাতা সম্বন্ধে আর কোনো কথা উঠেছিল ?
রসিক। অপরাধ করা মানবের ধর্ম আর ক্ষমা করা দেবীর— সে কথাটা অামি প্রসঙ্গক্রমে তুলেছিলেম—
বিপিন । তাতে কী বললেন ।
রসিক । কিছু না বলে বিদ্যুতের মতো চলে গেলেন । বিপিন চলে গেলেন ।
রসিক। কিন্তু, সে বিদ্যুতে বজ্র ছিল না।
বিপিন। গর্জন ?
রসিক । তাও ছিল না ।
বিপিন । তবে ?
রসিক । এক প্রান্তে কিম্বা অন্য প্রান্তে একটু হয়তো বর্ষণের আভাস ছিল ।
বিপিন। সেটুকুর অর্থ ?
রসিক। কী জানি মশায় । অর্থও থাকতে পারে, অনর্থও থাকতে পারে।
বিপিন। রসিকবাবু, আপনি কী বলেন আমি কিছু বুঝতে পারি নে।
রসিক । কী করে বুঝবেন— ভারী শক্ত কথা।
শ্ৰীশ । ( নিকটে আসিয়া ) কী কথা শক্ত মশায় ।
রসিক। এই বৃষ্টি-বজ্ৰ-বিদ্যুতের কথা ।
শ্ৰীশ। ওহে বিপিন, তার চেয়ে শক্ত কথা যদি শুনতে চাও তা হলে পূর্ণর কাছে
যাও ।
বিপিন। শক্ত কথা সম্বন্ধে আমার খুব বেশি শখ নেই ভাই ।
শ্ৰীশ। যুদ্ধ করার চেয়ে সন্ধি করার বিদ্যেটা ঢের বেশি দুরূহ– সেটা তোমার আসে। দোহাই তোমার, পূর্ণকে একটু ঠাণ্ড করে এসে গে। আমি বরঞ্চ ততক্ষণ রসিকবাবুর সঙ্গে বৃষ্টি-বজ্ৰ-বিদ্যুতের আলোচনা করে নিই। [ বিপিনের প্রস্থান রসিকবাবু, ওই-যে সেদিন আপনি যার নাম নৃপবালা বললেন তিনি—তিনি–র্তার সম্বন্ধে বিস্তারিত করে কিছু বলুন। সেদিন চকিতের মধ্যে র্তার মুখে এমন একটি স্নিগ্ধভাব দেখেছি, তার সম্বন্ধে কৌতুহল কিছুতেই থামাতে পারছি নে ।
রসিক। বিস্তারিত করে বললে কৌতুহল আরও বেড়ে যাবে। এরকম কৌতুহল ‘হবিষ৷ কৃষ্ণবরত্মেব ভূয় এবাভিবর্ধতে । আমি তো তাকে এতকাল ধরে জেনে আসছি,
পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৫৯
পরিভ্রমণে ঝাঁপ দিন
অনুসন্ধানে ঝাঁপ দিন
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
