পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চিরকুমার-সভা ২৬৩ অক্ষয় । ( জনাস্তিকে ) পুরীর হাতযশ আছে । পুরী তার মার জন্তে যে জামাইটি জুটিয়েছেন, পসার খুব বেড়ে গেছে। আজকালকার ছেলে কী করে বশ করতে হয় সে বিদ্যে— পুরবালা। (জনাস্তিকে) মশায় বুঝি আজকালকার ছেলে । জগত্তারিণী। মা, তোমরা পরামর্শ করো। কায়েংদিদি এসে বসে আছেন, আমি র্তাকে বিদায় করে আসি । শৈলবালা । মা, তুমি একটু বিবেচনা করে দেখে, ছেলে দুটিকে এখনও তোমরা কেউ দেখ নি, হঠাৎ— * জগত্তারিণী। বিবেচনা করতে করতে আমার জন্ম শেষ হয়ে এল, আর বিবেচনা করতে পারি নে— অক্ষয়। বিবেচনা সময়-মতে এর পর করলেই হবে, এখন কাজটা আগে হয়ে যাক । জগত্তারিণী। বলে তো বাবা, শৈলকে বুঝিয়ে বলে তো । [ প্রস্থান পুরবালা। মিথ্যে তুই ভাবছিস শৈল—ম যখন মনস্থির করেছেন ওঁকে আর কেউ টলাতে পারবে না। প্রজাপতির নির্বন্ধ আমি মানি ভাই । যার সঙ্গে যার হবার, হাজার বিবেচনা করে মলেও সে হবেই। অক্ষয় । সে তো ঠিক কথা— নইলে যার সঙ্গে যার হয়ে থাকে তার সঙ্গে না হয়ে আর একজনের সঙ্গে হ’ত । পুরবালা । কী যে তর্ক কর তোমার অর্ধেক কথা বোঝাই যায় না। অক্ষয় । তার কারণ অামি নির্বোধ । পুরবালা । যাও, এখন স্নান করতে যাও, মাথা ঠাণ্ড করে এসে গে। [ প্রস্থান রসিকের প্রবেশ শৈলবালা। রসিকদাদা, শুনেছ'তে সব ? মুশকিলে পড়া গেছে । রসিক। মুশকিল কিসের । কুমারসভারও কৌমার্য রয়ে গেল, ৰূপ-নীরুও পার পেলে, সব দিক রক্ষা হল । শৈলবালা । কোনো দিক রক্ষা হয় নি । রসিক। অন্তত এই বুড়োর দিকটা রক্ষা হয়েছে– দুটো অর্বাচনের সঙ্গে মিশে আমাকে রাত্রে রাস্তায় দাড়িয়ে শ্লোক আওড়াতে হবে না । শৈলবালা। মুখুজ্জেমশায়, তুমি না হলে রসিকদাদাকে কেউ শাসন করতে পারে না —উনি আমাদের কথা মানেন না।