পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৮৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२१७ রবীন্দ্র-রচনাবলী চতুর্থ দৃশ্য অক্ষয়ের বাসা জগত্তারিণী, পুরবালা ও অক্ষয় জগত্তারিণী । বাবা অক্ষয়, দেখে তো, মেয়েদের নিয়ে আমি কী করি । নেপো বসে বসে র্কাদছে ; নীর রেগে অস্থির, সে বলে সে কোনোমতেই বেরোবে না। ভদ্রলোকের ছেলেরা আজ এখনই আসবে, তাদের এখন কী বলে ফেরাব। তুমিই বাপু, ওদের শিখিয়ে পড়িয়ে বিবি করে তুলেছ, এখন তুমিই ওদের সামলাও । [ প্রস্থান পুরবাল । সত্যি, আমি ওদের রকম দেখে অবাক হয়ে গেছি, ওরা কি মনে করেছে ওরা— অক্ষয় । বোধ হয় আমাকে ছাড়া আর-কাউকে ওরা পছন্দ করছে না ; তোমারই সহোদরা কিনা, রুচিটা তোমারই মতো । পুরবালা। ঠাট্ট রাখে, এখন ঠাট্টার সময় নয়। তুমি ওদের একটু বুঝিয়ে বলবে কিনা বলে । তুমি না বললে ওরা শুনবে না। অক্ষয় । এত অতুগত ! একেই বলে ভগ্নীপতিব্ৰতা শু্যালী । আচ্ছা, আমার কাছে একবার পাঠিয়ে দাও – দেখি । [ পুরবালার প্রস্থান নৃপবালা ও নীরবালার প্রবেশ নীরবালা। না, মুখুজ্জেমশায়, সে কোনোমতেই হবে না। নৃপবালা । মুখুজ্জেমশায়, তোমার দুটি পায়ে পড়ি, আমাদের যার-তার সামনে ও রকম করে বের কোরো না । অক্ষয়। ফাসির হুকুম হলে একজন বলেছিল আমাকে বেশি উচুতে চড়িয়ে না, আমার মাথা ঘোরা ব্যামো আছে। তোদের যে তাই হল । বিয়ে করতে যাচ্ছিস, এখন দেখা দিতে লজ্জা করলে চলবে কেন । নীরবাল । কে বললে আমরা বিয়ে করতে যাচ্ছি। অক্ষয় । অহো, শরীরে পুলক সঞ্চার হচ্ছে। কিন্তু হৃদয় দুর্বল এবং দৈব বলবান, যদি দৈবাৎ প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করতে হয়— * নীরবালা । না, ভঙ্গ হবে না। অক্ষয়। হবে না তো? তবে নিৰ্ভয়ে এসে ; যুবক-দুটোকে দেখা দিয়ে আধপোড়া করে ছেড়ে দাও— হতভাগার বাসায় ফিরে গিয়ে মরে থাকুক।