পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

...os রবীন্দ্র-রচনাবলী

  • , সময়ে যেন স্রোত নেই, চার দিকে অবারিত আকাশ,

আচঞ্চল অবসর । যেদিন মেঘদূত লিখেছেন কবি সেদিন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে নীল পাহাড়ের গায়ে । দিগন্ত থেকে দিগন্তে ছুটেছে মেঘ, পুবে হাওয়া বয়েছে খামজল্লুবনাস্তকে দুলিয়ে দিয়ে। _ যক্ষনারী বলে উঠেছে, মাগে, পাহাড়সুদ্ধ নিল বুঝি উড়িয়ে । মেঘদূত উড়ে চলে যাওয়ার বিরহ, দুঃখের ভার পড়ল না তার পরে— সেই বিরহে ব্যণর উপর মুক্তি হয়েছে জয়ী । সেদিনকার পুথিবী জেগে উঠেছিল উচ্ছল ঝরনায়, উদ্‌বেল নদীস্রোতে মুখরিত বনহিল্লোলে, তার সঙ্গে তুলে দুলে উঠেছে মন্দাক্রান্ত ছন্দে বিরহীর বাণী । একদা যখন মিলনে ছিল না বাধা তখন ব্যবধান ছিল সমস্ত বিশ্বে, বিচিত্র পৃথিবীর বেষ্টনী পড়ে থাকত নিভৃত বাসরকক্ষের বাইরে। যেদিন এল বিচ্ছেদ সেদিন বাধন-ছাড়া তু:থ বেরোল নদী গিরি অরণ্যের উপর দিয়ে । কোণের কান্না মিলিয়ে গেল পথের উল্লাসে । অবশেষে ব্যথার রূপ দেখা গেল যে কৈলাসে যাত্র হল শেষ । সেখানে অচল ঐশ্বর্যের মাঝখানে প্রতীক্ষার নিশ্চল বেদন ।