পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৩৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলা শব্দতত্ত্ব Sobr রসা রসি, দড়া দড়ি, ঘড়া ঘটি, বড় বড়ি, ঝোলা ঝুলি, নোড়া নুড়ি, গোলা গুলি, হাঁড়া হাঁড়ি, ছোরা ছুরি, ঘুবা ঘুবি, কুপা কুপি, কড়া কড়ি, ঝোড়া ঝুড়ি, কলস কলসি, জোড়া জুড়ি, ছাতা ছাতি। ' কোনো কোনো স্থলে এইপ্ৰকার রূপান্তরে কেবল ক্ষুদ্রত্ব বৃহত্ত্ব ভেদ বুঝায় না। একেবারে দ্রব্যভেদ বুঝায়। যথা, কেঁাড়া (বাঁশের) কুঁড়ি (ফুলের), জাঁতা জাতি, বাটা (পানের) বাটি। কিন্তু এ কথা বলা আবশ্যক টা ও টি, গুলা ও গুলি স্ত্রীলিঙ্গ পুংলিঙ্গ উভয় প্রকার শব্দেই ব্যবহৃত হয়। মেয়েগুলো ছেলেগুলি, বউটাি জামাইটি ইত্যাদি। CSI& Seyy প্রতিশব্দ S ইংরেজি ভাষার সঙ্গে বাংলা ভাষার একটা কারবার চলিয়াছে। সেই কারবার-সূত্রে বিশ্বের হাটে আমাদের ভাবের লেন-দেনা ঘটিতেছে। এই লেন-দেনায় সব চেয়ে বিঘ্ন ভাষায় শব্দের অভাব। একদিন আমাদের দেশের ইংরেজি পড়ুয়ারা এই দৈন্য দেখিয়া নিজের ভাষার প্রতি উদাসীন ছিলেন। তঁহারা ইংরাজিতেই লেখাপড়া শুরু করিয়াছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের বড়ো সৌভাগ্য এই যে, সেই বড়ো দৈন্যের অবস্থাতেও দেশে এমন সকল মানুষ উঠিয়াছিলেন যাহারা বুঝিয়াছিলেন বাংলা ভাষার ভিতর দিয়া ছাড়া দেশের মনকে বলবান করিবার কোনো উপায় নাই। তাহারা ভরসা করিয়া তখনকার দিনের বাংলা ভাষার গ্রাম্য হাটেই বিশ্বসম্পদের কারবার খুলিয়া বসিলেন। সেই কারবারের মূলধন তখন সামান্য ছিল। কিন্তু আশা ছিল মস্ত। সেই আশা দিনে দিনেই সার্থক হইয়া উঠিতেছে! আজি মূলধন বাড়িয়া উঠিয়াছে— আজ শুধু কেবল আমাদের আমদানির হাট নয়- রফতানিও শুরু হইল। ইহার ফল হইয়াছে এই যে বাংলাদেশ, ধনের বাণিজ্যে যথেষ্ট পিছইয়া আছে বটে। কিন্তু ভাবের বাণিজ্যে বাংলাদেশ ভারতের অন্যান্য প্রদেশকে ছাড়াইয়া গেল। মাদ্রাজে যখন গিয়াছিলাম তখন একটা প্রশ্ন বার বার অনেকের কাছেই শুনিয়াছি-“মৌলিন্যে * বাংলাদেশ আমাদের চেয়ে এত অগ্রসর হইল কেন ?” তাহার সব কারণ স্পষ্ট করিয়া নির্দেশ করা সহজ নহে। কিন্তু অন্তত একটা কারণ এই যে, বাঙালির ছেলেমেয়ে শিশুকাল হইতেই বাংলা সাহিত্য হইতে তাহদের মনের খোরাক পাইয়া আসিতেছে। অধিক বয়সে যে পর্যন্ত না ইংরেজি শেখে সে পর্যন্ত তাহার মন উপবাসী থাকে না। : - . . . . . আজ পর্যন্ত আমাদের ভাষা প্রধানত ধর্মসাহিত্য এবং রসসাহিত্য লইয়াই চলিয়া আসিতেছে। দর্শন বিজ্ঞান প্রভৃতির আলোচনায় যে-সকল শব্দের দরকার তাহা আমাদের ভাষায় জমে নাই। কিন্তু কেবল পরিভাষা নহে, সকলপ্রকার আলোচনাতেই আমরা এমন অনেক কথা পাই যাহা ইংরেজি ভাষায় সুপ্রচলিত, অথচ যাহার ঠিক প্রতিশব্দ বাংলায় নাই। ইহা লইয়া আমাদের পদে S प्रवा : প্রতিশব্দ ২ ` ५॥३६