পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৪৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাংলা শব্দতত্ত্ব । 8. সংক্রামকতাররূপে দেখা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সেটারও মীমাংসা করে দিয়েছেন, এখন থেকে কর্নওয়ালিসের কৰ্ণে মূর্ধন্য ণ-য়ের খোচা নিষিদ্ধ। । প্রাকৃত বাংলা আমাদের সাহিত্যে অল্প দিন হল অধিকার বিস্তার করতে আরম্ভ করেছে। তার বানান এখনো আছে। কঁচা। এখনি ঠিক করবার সময়, এর বানান উচ্চারণ-ঘেঁষা হবে, অথবা হবে সংস্কৃত অভিধান ঘোষা। . যেমনি হােক, কোনো কর্তৃপক্ষের দ্বারা একটা কোনো আদর্শ স্থির করে দেওয়া দরকার। তার পরে বিনা বিতর্কে সেটাকে গ্রহণ করে স্বেচ্ছাচারিতার হাত থেকে নিস্কৃতি পাওয়া যেতে পারবে। সম্প্রতি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় সে কাজ করে দিয়েছেন- ব্যক্তিগত মতামতের আলোচনায় ব্যাপারটাকে অনিশ্চিত করে রাখা অনাবশ্যক। বাংলা ক্রিয়াপদে স্বয়-র যোগে স্বরবর্ণ প্রয়োগ প্রচলিত হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বানানবিধিসভা কোথাও বা য়া-রক্ষা করেছেন কোথাও বা করেন নি। সে স্থলে সর্বত্রই য়া-রক্ষার আমি পক্ষপাতী এই কথা আমি জানিয়েছিলেম। আমার মতে এ ক্ষেত্রে বানানভেদের প্রয়োজন নেই বলেছি বটে, কিন্তু বিদ্রোহ করতে চাই নে। যেটা স্থির হয়েছে সেটাকে গ্ৰহণ করতে প্ৰস্তুত আছি। তবু এইবার কথাটাকে শেষ করে দেব। ই-কারের পরে যখন কোনো স্বরবর্ণের আগম হয়, তখন উভয়ে মিলে য় ধ্বনির উদ্ভব হয় এটা জানা কথা। সেই নিয়ম অনুসারে একদা খায়্যা পায়্যা প্রভৃতি বানান প্রচলিত হয়েছিল এবং সেই কারণেই কেতাবী সাধু-বাংলায় হইয়া করিয়া প্রভৃতি বানানের উৎপত্তি। ওটা অনবধানবশত হয় নি এইটে আমার বক্তব্য। হয় ক্রিয়াপদে হঅ বানান চলে নি। এখানে হয়-এর ‘য়’ একটি লুপ্ত এ-কার বহন করছে। ব্যাকরণ-বিধি অনুসারে হএ বানান চলতে পারত। চলে নি যে, তার কারণ বাংলা ধ্বনিতত্ত্বের নিয়ম অনুসারে শব্দের শেষবৰ্ণ যদি স্বরবর্ণ হয় তবে দীর্ঘস্বর হলেও তার উচ্চারণ হ্রস্ব হয়। হ্রস্ব এ এবং য়-র উচ্চারণে ভেদ নেই। এই অন্ত এ স্বরবর্ণের উচ্চারণকে যদি দীর্ঘ করতে হত তা হলে য় যোগ করা অনিবাৰ্য হত। তা হলে লিখতে হত হয়ে, হএ লিখে হয়ে উচ্চারণ চলে না। তেমনি খাও শব্দের ও হ্রস্বস্বর, কিন্তু খেও শব্দের ও হ্রস্ব নয়— সেইজন্যে দীর্ঘ ওকারের 5ቭ=፱፭ ኛŠfiC°ዘ 8-Š ?Nር፰፻፲፰ው Šg | S SS SS SiSSS SS SS SS কিন্তু এ তর্কও অবাস্তর। আসল কথাটা এই যে ই-কারের পরবর্তী স্বরবর্ণের যোগে য়া-র উদ্ভব স্বরসন্ধির নিয়মানুযায়ী। বেআইন বেআড় বেআক্কেল বানান সুসংগত কারণ এ-কারের সঙ্গে অন্য স্বরবর্ণে মিলনে ঘটক দরকার করে না। বানান অনুসারে খেও এবং খেয়ো উচ্চারণের ভেদ নেই এ কথা মানা শক্ত। এখানে মনে রাখা দরকার খেয়ো (খাইয়ো) শব্দের মাঝখানে একটা লুপ্ত ইকার আছে। কিন্তু উচ্চারণে তার প্রভাব লুপ্ত হয় নি। লুপ্ত ই-কার অন্যত্রও উচ্চারণ-মহলে আপন প্রভাব রক্ষা করে থাকে। সে কথার আলোচনা আমার বাংলা শব্দতত্ত্ব প্রন্থে * পূর্বেই করেছি। ” ':औण s०8७ ১ “বাংলা উচ্চারণ' প্ৰবন্ধ উঠবো । Տ StlS էր