পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ਸਲ ○ &識 করিয়া যে মূর্তি গড়া তার সঙ্গে তেজ মরুৎ ব্যোমে যে সংযোগ আছে। এই খবরটা মনে করাইয়া ፏICጃ | '. . আমাদের বেদমন্ত্রগানেও ঐরূপ। তার সঙ্গে একটি সরল সুর লাগিয়া থাকে, মহারণ্যের মর্মরধ্বনির মতো, মহাসমুদ্রের কলগৰ্জনের মতো। তাহাতে কেবল এই অ্যাভাস দিতে থাকে যে, এই কথাগুলি একদিন দুইদিনের নহে, ইহা অন্তহীন কালের, ইহা মানুষের ক্ষণিক সুখদুঃখের বাণী নহে, ইহা আত্মার নীরবতারই যেন আত্মগত নিবেদন । । মহাকাব্যের বড়ো কথাটা যেখানে স্বতই বড়ো, কাব্যের খাতিরে সুর সেখানে আপনাকে ইঙ্গিত মাত্রে ছোটাে করিয়া রাখিয়াছে, কিন্তু যেখানে আবার সংগীতই মুখ্য সেখানে তার সঙ্গের কথাটি কেবলই বলিতে থাকে, আমি কেহই না, আমি কিছুই না, আমার মহিমা সুরে '-এইজন্য হিন্দুস্থানী গানের কথাটা অধিকাংশ স্থলেই যা-খুশি-তাই। এই-যে পূরবীর গান--- ক্যয়সে ধরা মেরে শিরো’পর গগরিয়া’- এর মানে, শামি আমার জলের কলসি রাখবার বিড়েটা চুরি করিয়াছে।” এই তুচ্ছ কথাটাকে এত বড়ো সুগভীর বেদনার সুরে বাধিবামাত্র মন বলে এই-যে কলসি, এই-যে কিড়ে, এ তো সামানা কলসি সামান্য বিড়ে নয়, এ এমন একটা-কিছু চুরি যার দাম বলিবার মতো ভাষা জগতে নাইফুরি হিসাবের অসীম অঙ্কটা কেবল ঐ পূরবীর তানের মধ্যেই পৌঁছে। কোনো একটা বিশেষ উদ্দীপনা- যেমন যুদ্ধের সময় সৈনিকদের মনকে রণোৎসাহে উত্তেজিত করা- আমাদের সংগীতের ব্যবহারে দেখা যায় না। তার বেলায় তুরী ভেরী দামামা শঙ্খ প্রভৃতির সহযোগে একটা তুমুল কোলাহলের ব্যবস্থা। কেননা আমাদের সংগীত জিনিসটাই ভূমির সুর ; তার বৈরাগ্য, তার শান্তি, তার গভীরতা সমস্ত সংকীর্ণ উত্তেজনাকে নষ্ট করিয়া দিবার জন্যই। এই একই কারণে হাস্যরস আমাদের সংগীতের আপনি জিনিস নয়। কেননা বিকৃতিকে লািহয়াই বিদ্রুপ। প্রকৃতির ত্রুটিই এই বিকৃতি, সুতরাং ত্যাহা বৃহতের বিরুদ্ধ। শাস্তহাস্য বিশ্বব্যাপীর, কিন্তু অট্টহাস্য নহে। সমগ্রের সঙ্গে অসামঞ্জস্যই পরিহাসের ভিত্তি। এইজন্যই আমাদের আধুনিক উত্তেজনার গান কিংবা হাসির গান স্বভাবতই বিলিতি হাঁদের হইয়া পড়ে। • - বিলিতির সঙ্গে এই দিশি গানের ছাদের তফাতটা কোনখানে ? প্রধান তফাত সেই অতিসূক্ষ্ম সূরাগুলি লইয়া যাকে বলে শ্রুতি। এই শ্রুতি আমাদের গানের সূক্ষ্ম স্নায়ুতন্ত্র। ইহারই যোগে এক পর কেবল যে-আর-এক সুরের পাশাপাশি থাকে তা নয়, তাদের মধ্যে নাড়ীর সম্বন্ধ ঘটে। এই 'ড়ীর সম্বন্ধ ছিন্ন করিলে রাগরাগিণী যদি-বা টেকে, তাদের ছদটা বদল হইয়া যায়। আমাদের ধল ফ্যাশানের কন্সার্টের গৎগুলি তার প্রমাণ। এই গতের সুরগুলি কাটা-কাটা হইয়া নৃত্য করিতে থাকে, কিন্তু তাদের মপ্লে সেই বেদনার সম্বন্ধ থাকে না যা লইয়া আমাদের সংগীতের গভীরতা। এই সব কাটা সুরগুলিকে লইয়া নানা প্রকারে খেলানো যায়-উত্তেজনা বলো, উল্লাস বলো, পরিহাস বলো, মানুষের বিশেষ বিশেষ হৃদয়বেগ ৰলো, নানা ভাবে তাদের ব্যবহার করা যাইতে পারে। কিন্তু যেখানে রাগন্নাগিণী আপনার সুসম্পূর্ণতার গভীর্ষে নির্বিকারভাবে বিরাজ করিতেছে স্বৰ্গলোকের একটা মন্ত সুবিধা: কিংবা অসুবিধা আছে, সেখানে সমভই সম্পূর্ণ। এইজন্য