পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৫৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

(2Wう○ রবীন্দ্র-রচনাবলী ado প্রমাণ পাওয়া যেত। জুতো-চুরির প্রাবল্যে। আমার পিতার পরিচর ছিল কিশোরী চাটুজে। পূর্ববয়সে সে ছিল কোনো পাঁচালির দলের নেতা। সে আমাকে প্রায় বলত, দাদাঁজি, তোমাকে যদি পাঁচালির দলে পাওয়া যেত তা হলে-”। বাকিটুকু আর ভাষায় প্রকাশ করতে পারত না। বালক দাদাজিরও মন চঞ্চল হয়ে উঠত পাঁচালির দলে খ্যাতি অর্জন করবার অসম্ভব দূরাশায়। পাচলির যে গান তার কাছে শুনতুম তার রাগিণী ছিল সনাতন হিন্দুস্থানী, কিন্তু তার সুর বাংলা কাব্যের সঙ্গে মৈত্রী করতে গিয়ে পশ্চিমী ঘাঘরার ঘূর্ণবর্তকে বাঙালি শাড়ির বাহুল্যবিহীন। সহজ বেষ্টনে পরিণত করেছে।-- qS q S কাতরে রেখে রাঙা পায় মাঅভয়ে দীনহীন ক্ষীণ জনে যা করো, মা, নিজগুণেতারিতে হবে অধীনে, আমি অতি নিরুপায়।” এই সুর আজও মনে পড়ে। সূর্যের কিরণচ্ছটা বহু লক্ষ যোজন দূর পর্যন্ত উৎসারিত হয়ে ওঠে, এই তার তানের খেলা। আর আমার শ্যামা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল প্ৰভাতের রুপোলি কঙ্কা আর সূর্যস্তকালের সোনালি জরির আঁচুলা নিয়ে তখীর গায়ে গায়ে ঘিরে ঘিরে দক্ষিণ হাওয়ায় কঁািপতে TG fVg qg CV así, qg (el 53 ‘ভালোবাসিবে বলে ভালোবাসি নে” —এতে তানের প্রগলািভতা নেই। কিন্তু বেদনা আছে তো। এও যে নিতান্তই চাই সাধারণের জন্যে। শুধু সাধারণের জন্যে কেন বলি, এক সময়ে উচ্চ ঘরের রসনাও তৃপ্তির সঙ্গে এর স্বাদ গ্রহণ করেছে। মেয়েদের অশিক্ষিতাপটুত্বের কথা কালিদাস বলেছেন, সরল প্রকৃতির লোকের অশিক্ষিত স্বাদসম্ভোগের কথাটাও সত্য। যে ঘরের পাকশালার দূর পাড়া পর্যন্ত মোগলাই ভোজের লোভন গন্ধে আমোদিত, সেই ঘরেই বিধবা মাসিমার রাধা মশলাবিরল নিরামিষ ব্যঞ্জনের আদর হয়তো उद्धि 05:9 निउा श्! - প্রবাসে যখন যায় গো সে তারে বলি বলি আর বলা হল না।” —এ যে অত্যন্ত বাঙালির গান। বাঙালির ভাবপ্রবণ হৃদয় অত্যন্ত তৃষিত হয়েই গান চেয়েছিল, তাই সে আপনি সহজ গান আপনি সৃষ্টি না করে বঁাচে নি। তাই আজও দেখতে পাই বাংলা সাহিত্যে গান যখন-তখন যেখানে-সেখানে অনাহূত অনধিকারপ্রবেশ করতে কুষ্ঠিত হয় না। এতে অন্যদেশীয় অলংকারশাস্ত্রসম্মত রীতিভঙ্গ হয়ে থাকে। কিন্তু আমাদের রীতি আমাদেরই স্বভাকসংগত। তাকে ভৎসনা করি কোন প্ৰাণে? সেদিন গান ফর্মাশ করে বসলেন। কোনো বিলাতী নাট্যেশ্বর এমন প্রস্তাব মুখে আনতেন না, মনে করতেন এটা নাট্যকলার মাঝখানে একটা অত্যুৎপাত। এখনকার ইংরেজি-পোড়েরাও হয়তো এরকম অনিয়মে তর্জনী তুলবেন। আমি তা করি নে, আমি বলি আমাদের আদর্শ আমাদের নিজের মন আপন আনন্দের তাগিদে স্বভাবতই সৃষ্টি করবে। সেই সৃষ্টিতে কলাতন্ধের সংযম এবং ছন্দ বাঁচিয়ে চলতে হবে, কিন্তু তার চেহারা যদি সাহেবী ছাঁচের না হয় তবে তাকে পিটিয়ে বদল করতেই হবে এ কথা বলতে পারব না। বিদেশী অলংকারশান্ত্র পড়বার বহু পূর্ব থেকে আমাদের নাট্য, যাকে আমরা যাত্ৰা বলি, সে তো গানের সুরেই ঢালা সে যেন বাংলা দেশের ভূসংস্থানেরই মতো ;