পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬২১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংগীতচিন্ত । SS সে নির্বস্তুক (abstract)। বাক্যের সৃষ্টির উপরে আমার সংশয় জন্মে গেছে। এত রকম চলিত খেয়ালের উপর তার দর যাচাই হয়, খুঁজে পাই নে তার মূল্যের আদর্শ।. । আর ছবি। এ পাড়ায় এদের উপরে বাজারের বস্তাবন্দীর ছাপ পড়ে নি। যদিও আমার গান নিয়ে বাচসার অন্ত নেই, তবু সেটা আমার মনকে নাড়া লাগায় না। তার একটা কারণ, সুরের সমপ্রতা নিয়ে কাটাছেড়া করা চলে না। মনের মধ্যে ওর যে প্রেরণা সে ব্যাখ্যার অতীত। রাগরাগিণীর। মহাজনদের ওস্তাদিকে আমি আমল দিইনি, এ সম্বন্ধে জাতখোয়ানো কলঙ্ককে আমি অঙ্গের ভূষণ বলে মেনে নিয়েছি। কলার সকল বিভাগে আমি ব্রাত্য, বিশেষভাবে গানের বিভাগে। গানে আমার পাণ্ডিত্য নেই। এ কথা আমার নিতান্ত জানা- তার চেয়ে বেশি জানা গানের ভিতর দিয়ে অব্যবহিত আনন্দের সহজ বোধ। এই সহজ (আনন্দের নিশ্চিত উপলব্ধির উপরে বাধা আইনের করক্ষেপ আমাকে একটুও নাড়াতে পারে নি। এখানে আমি উদ্ধত, আমি স্পর্ধিত আমার আন্তরিক অধিকারের জোরে। বচনের অতীত বলেই গানের অনির্বাচনীয়তা আপন মহিমায় আপনি বিরাজ করতে পারে, যদি তার মধ্যে থাকে আইনের চেয়ে বড়ো আইন। গান যখন সম্পূর্ণ জাগে মনের মধ্যে তখন চিত্ত অমরাবতীতে গিয়ে পৌছয়। এই-যে জাগরণের কথা বলছি তার মানে এ নয় যে, সে একটা মস্ত কোনো অপূর্ব সৃষ্টি-সহযোগে। হয়তো দেখা যাবে সে একটা সামান্য কিছু। কিন্তু, আমার কাছে তার সত্য তার তৎসাময়িক অকৃত্ৰিম বেদনার বেগে। কিছুদিন পরে তার তেজ কমে যেতে পারে, কিন্তু যে মানুষ সম্ভোগ করেছে তার তাতে কিছু আসে যায় না, যদি না সে অন্যের কাছে বকশিশের বাঁধা বরাদ্দ দাবি করে। নতুন রচনার আনন্দে আমি পদে পদে ভুলি, গাছ যেমন ভোলে তার ফুল ফোটানাে। সেইজন্যে অন্যেরা যখন ভোলে, সে আমি টেরও পাই নে। যে ছন্দ-উৎস বেয়ে অনাদিকাল ধরে ঝরিছে রূপের ঝর্না তারই যে-কোনো একটা ধারা এসে যখন চেতনায় আবর্তিত হয়ে ওঠে, এমন-কি ক্ষণকালের জন্যেও, তখন তার জাদুতে কিছু না রূপ ধরে কিছু-একটার, সেই জাদুর স্পর্শ লাগে কল্পনায়- যেন ইন্দ্ৰলোকের থেকে বাহবা এসে পৌঁছয় আমার মর্তসীমানায়— সেই দেবতাদের উৎসাহ পাই যে দেবতারা স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা। হয়তো সেই মুহূর্তে তাঁরা কড়ি-মূল্য দেন, কিন্তু সে স্বগীয় কড়ি। ১. গানেতে মনের মধ্যে এনে দেয় একটা দূরত্বের পরিপ্রেক্ষণী। বিষয়টা যত কাছেরই হােক সুরে হয় তাঁর রথযাত্রা ; তাকে দেখতে পাই ছন্দের লোকান্তরে, সীমান্তরে ; প্রাত্যহিকের করুস্পর্শে DgK BDB D BOSDD BB BBBS SSS SSSuuSSSSMSSSSSSS SSS আমার শ্যামা নাটকের জন্যে একটা গান তৈরি করেছি। ভৈরবী রাগিণীতে- । এই গরবিনীকে সংসারে দেখেছি বারংবার, কিন্তু গানের সুরা শুনলে বুঝবে এই বারংবারের অনেক বাইরে সে চলেগেছে। যেন কোন চিরকালের গরবিনীর পায়ের কাছে বসে মুগ্ধ মন-অন্তরে, অন্তরে সাধনা করতে থাকে। সূর্যময় ছন্দোময় দূরত্বই তার সকলের চেয়ে বড়ো অলংকার। এই