পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৪৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সংগীতচিন্তা WV সাহিত্যবিশ্বে অতুলনীয়- ওর মধ্যে বিস্তর তারা আছে, তারা পরস্পর সুগ্রথিত নয়-অতি বৃহৎ নেবুলার জালে জালে তারা বাঁধা, আর্টের ঐক্যে নয়! এইজন্যই রামায়ণ হল মহাকাব্য, মহাভারতকে কোনো আলংকারিক মহাকাব্য বলে না। আলাপ যদি স্বতই সংগীতের মহাকাব্য হয় 0७ों श्ल, नएल श्न नों। . আমার সঙ্গে যাদের মতের বা ভাবের মিল নেই তারা সেই অনৈক্যকে আমার অপরাধ বলে গণ্য করে, তাদের দণ্ডবিধি আমার সম্বন্ধে নির্মম। তাদের নিজের বুদ্ধি ও রুচিকেই তারা বুদ্ধিমত্তার যদি একমাত্র আদর্শ মনে করে তাতে ক্ষতি হয় না, কিন্তু সেটাকেই তারা যদি ন্যায় অন্যায়ের শাশ্বত আদর্শ মনে করে দণ্ডবিধি বেঁধে দেয়। তবে ভারতের ভাবী শাসনতন্ত্র তাদের আয়ত্তগত হলে এ দেশে আমার দানাপানি চলবে না। আমার বিচারকদের এই কঠোরতাই আমার চিরাভ্যন্ত, সেই কারণে তোমার ভাষাগত অনুকম্পায় আমি বিস্মিত। ভয় হয় পাছে এটা টেকসই না হয়-- অন্তত আমি যে ক'দিন টিকি ততদিনের জন্যও, আশা করি, মতের অনৈক্য সত্ত্বেও আমার মান বঁচিয়ে চলৰে। ইতি ৯ই এপ্রেল ১৯৩৫ ৷৷ রবীন্দ্রনাথ পূঃ- তুমি যে চিঠিখানা লিখেছিলে তার মধ্যে অসংলগ্নতা কিছু দেখি নি। বস্তুত প্রথম পড়েই মনে করেছিলুম বলি ‘মেনে নিলুমী’। আমি অত্যন্ত কুঁড়ে, পরিশ্রম বঁচাবার জন্যে প্রথমটা ওঠে। প্রবল হয়ে। হাঁ না করতে করতে অবশেষে হঠাৎ নিজেকে বঁটাকানি দিয়ে বলি, “উচিত কথা বলতে ছাড়ব না।” উচিত কথা বলবার দুস্তপ্রবৃত্তি মানুষের মত একটা ব্যসন, উনিই হচ্ছেন যতসব অনুচিত কথার পিতামহী। - (खाgानकों কল্যাণীয়েযু কাল সন্ধ্যাবেলায় ঘুরে ফিরে আবার সেই কথাটাই উঠে পড়ল-“ভালো তো লাগে”। সংগীতের কোনো-একটা বিশেষ বিকাশ সংযত সংহত সুসংলগ্ন সুপরিমিত মূর্তি নাও যদি নেয়, তার মধ্যে বারে বারে পুনরাবৃত্তি ও সুদীর্ঘকাল ধরে তিনকর্তকের বাধাহীন আন্দোলন যদি দৈহিক ক্লান্তি ও অবকাশের সসীমতা ছাড়া থামবার অন্য কোনো হেতু নাও পায়, তবুও তো দেখছি ভালো লাগে। ভালো লাগবার কারণ হচ্ছে এই যে সংগীতের উপকরণের মধ্যে ইন্দ্ৰিয়তৃপ্তিকর গুণ আছে- তার ফলে, সুসম্পূর্ণ কলারূপ গ্ৰহণ না করলেও সে আব্দর পেতে পারে। মাটির পিণ্ড যতক্ষশ না ঘট আকারে সুপরিণত হয় ততক্ষণ সে মাটি। বিশেষভাবে কলাসাধনার গুণেই সে মহাৰ্য হয়। সোনার উজ্জ্বলতা প্রথম থেকেই চোখ জিতে নেয়। তার আপনি বর্ণগুণেই সে পেয়েছে আভিজাত্য। অতএব তাল তাল সোনা যদি স্তুপীকার করা য়ায় তবে সে অভিভূত করবে। মনকে।