পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (ষোড়শ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

গ্রন্থপরিচয় どbr? (ሱ একদিন মধ্যাহ্নে খুব মেঘ করিয়াছে। সেই মেঘলাদিনের ছায়াঘন অবকাশের আনন্দে বাড়ির ভিতরে এক ঘরে খাটের উপর উপুড় হইয়া পড়িয়া একটা প্লেট লইয়া লিখিলাম "গহনকুসুমকুঞ্জমাঝে”। লিখিয়া ভারী খুশি হইলাম ; তখনি এমন লোককে পড়িয়া শুনাইলাম, বুঝিতে পারিবার আশঙ্কামাত্ৰ যাহাকে স্পর্শ করিতে পারে না। সুতরাং সে গভীরভাবে মাথা নাড়িয়া কহিল, “বেশ তো, এ তো বেশ হইয়াছে।’ - や সকলের উপরের তলায় একটি ছোটো ঘরে আমার আশ্রয় ছিল। রাত্রেও আমি সেই নির্জন ঘরে শুইয়া থাকিতাম। শুক্লপক্ষের নিস্তািন্ধ রাত্রে আমি সেই নদীর দিকের প্রকাণ্ড ছদটাতে একলা ঘুরিয়া বেড়াইয়াছি। এইরূপ একটা রাত্রে আমি যেমন-খুশি ভাঙা ছন্দে একটা গান তৈরি করিয়াছিলাম- তাহার প্রথম চারটে লাইন উদধূত করিতেছি।-- নীরব রজনী দেখো মগ্ন জোছনায়, 8ी क्षीद्भ प्रस्टि क्षेी १& c ! । ঘুমঘোরভরা গান বিভােবরী গায়, রজনীর কণ্ঠসাথে সুকণ্ঠ মিলাও গো! ইহার বাকি অংশ পরে ভদ্রচ্ছন্দে বধিয়া পরিবর্তিত করিয়া তখনকার গানের বহিতে ছাপাইয়ছিলামকিন্তু সেই পরিবর্তনের মধ্যে, সেই সবরমতী-নদীতীরের, সেই ক্ষিপ্ত বালকের নিদ্রাহারাষ্ট্রীষ্মরজনীর কিছুই ছিল না। ‘বলি ও আমার গোলাপবালা’ গানটা এমনি আর-এক রাত্রে লিখিয়া বেহাগ সুরে বসাইয়া শুন শুনা করিয়া গাহিয়া বেড়াইতেছিলাম। শুনা নলিনী খোলো গো আঁখি ‘আঁধার শাখা উজল করি।” প্রভৃতি আমায় ছেলেবেলাকার অনেকগুলি গান এইখানেই লেখা। A ছিল। অক্ষয়বাবুর কাছে সেই কবিতাগুলির মুগ্ধ আবৃত্তি অনেকবার শুনিয়াছি। ছবির সঙ্গে বিজড়িত সেই কবিতাগুলি আমার মনে আয়ার্লন্ডের একটি পুরাতন মায়ালোক সৃজন করিয়াছিল। তখন এই কবিতার সুরগুলি শুনি নাই, তাহা আমার কল্পনার মধ্যেই ছিল। ছবিতে বীণা আঁকা ছিল, সেই বীণার সুর আমার মনের মধ্যে বাজিত। এই আইরিশ মৌলভীজ আমি সুরে শুনিব, শিখিব এবং শিখিয়া আসিয়া অক্ষয়বাবুকে শুনাইব, ইহাই আমার বড়ো ইচ্ছা ছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে জীবনের কোনো কোনো ইচ্ছা পূর্ণ হয় এবং হইয়াই আত্মহত্যা সাধন করে। আইরিশ মেলভীজ বিলাতে গিয়া কতকগুলি শুনিলাম ও শিখিলাম, কিন্তু আগাগোড়া সব গানগুলি সম্পূর্ণ করিবার ইচ্ছ। আর রহিল না। অনেকগুলি সুর মিষ্ট এবং করুণ এবং সরল, কিন্তু তবু তাহাতে আয়ার্লন্ডের প্রাচীন কবিসভার নীরব বীণা তেমন করিয়া যোগ দিল না। দেশে ফিরিয়া আসিয়া এই-সকল এবং অন্যান্য বিলাতি গান স্বজনসমাজে গাহিয়া শুনাইলাম। সকলেই বলিলেন, ‘রবির গলা এমন বদল হইল কোন! কেমন যেন বিদেশী রকমের-মজার রকমের-হইয়াছে।’ এমন-কি তাহারা বলিতেন আমার কথা কহিবার গলায়ও একটু কেমন সুর