পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৫৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

SV8 রবীন্দ্র-রচনাবলী এ বিপুল কুল-মান এ কালসমরে ? ইত্যাদি রাবণের ক্ৰন্দন দেখিয়া সচিবশ্রেষ্ঠ বুধঃ সারণ” সাত্মনা করিয়া কহিলেন, ७ी उद९३ढ् মায়াময়, বৃথা এর সুখ দুঃখ যত। রাবণ কহিলেন, কিন্তু জেনে শুনে তবু কঁদে এ-পরাণ অবোধ’। ইহার পর দূত যে বীরবাহুর যুদ্ধের বর্ণনা করিলেন তাহা মন্দ নহে, তাহাতে কবি কথাগুলি বেশ বাছিয়া বসাইয়াছেন। তাহার পরে দূত বীরবাহুর মৃত্যু স্মরণ করিয়া কঁদিল— ‘কাব্দে যথা বিলাপী স্মরিয়া পূর্ব দুঃখ’— এ কথাটি অতিশয় অযথা হইয়াছে। অমনি সভাসুদ্ধ কঁদিল, রাবণ কঁদিল, আমার মনে হইল আমি একরাশি স্ত্রীলোকের মধ্যে বসিয়া পড়িলাম। অশ্রুময় আঁখি পুনঃ কহিলা রাবণ, একে তো অশ্রুময় আঁখি রাবণ, তাহাতে আবার ‘মন্দোদরী মনোহর’, আমরা বাল্মীকির রাবণকে হারাইয়া ফেলিলাম। বড়ো বড়ো কবিরা এক-একটি বিশেষণে র্তাহাদের বর্ণনীয় বিষয়ের স্বপক্ষে এক-এক আকাশ ভাব আনিয়া দেন। রোদনের সময় রাবণের মন্দোদরী মনোহর’ বিশেষণ দিবার প্রয়োজন কী? যখন কবি রাবণের সৌন্দৰ্য বুঝাইবার জন্য কোনো বর্ণনা করিবেন তখন মন্দোদরী মনোহর’ রাবণের বিশেষণ অর্থে ব্যবহৃত হইতে পারে। তৎপরে দূত তেজের সহিত বীরবাহুর মৃত্যু বর্ণনা করিলেন, তখন রাবণের বীরত্ব ফিরিয়া আসিল, কেননা ডমরুধ্বনি না শুনিলে ফণী কখনো উত্তেজিত হয় না। তাহার পরে শ্মশানে বীরবাহুর মৃতকায় দেখিয়া মহাশোকে শোকাকুল কহিলা রাবণ। যে শয্যায় আজি তুমি শুয়েছ। কুমার প্রিয়তম, বীরকুলাসাধ্য এ শয়নে সদা! রিপুন্দল বলে দলিয়া সমরে জন্মভূমি রক্ষাহেতু কে ডরে মরিতে? যে ডরে ভীরু সে মূঢ় শত ধিক তারে। এতদূর পড়িয়া আশা হয় যে এবার বুঝি রাবণের উপযুক্ত রোদানই হইবে কিন্তু তাহার পরেই আছে তবু বৎস যে হৃদয় মুগধ- 事 কোমল সে ফুলসম। এ বজ্ৰ আঘাতে কত যে কার সে, তা জানেন সে জন অন্তর্যামী যিনি; আমি কহিতে অক্ষম। হে বিধি, এ ভবভূমি তব লীলাস্থলী। পরের যাতনা কিন্তু দেখি কি হে তুমি হও সুখী? পিতা সদা পুত্র দুঃখে দুঃখী; তুমি হে জগতপিতা, এ কী রীতি তব? হা পুত্ৰ! হা বীরবাহু! বীরেন্দ্ৰ কেশরী কেমনে ধরিব প্ৰাণ তোমার বিহনে ? সুরুচি পাঠকেরা কখনোই বলিবেন না যে, ইহা রাবণের উপযুক্ত রোদন হইয়াছে। এইরূপে আক্ষেপিয়া রাক্ষস ঈশ্বর , नॉ१त