পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

S 8V রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী হৃদয়ের ধন তুমি গোপিকার হৰদে বজ্ৰ হানি চলিলে ? , -হরু ঠাকুর ইহার মধ্যে বাকচাতুরী নাই, কৃত্রিমতা নাই, ভাবিয়া চিড়িয়া গড়িয়া পিটিয়া ঘর হইতে রাধা উপমা ভাবিয়া আইসেন নাই, সরল হৃদয়ের কথা নয়নের অশ্রািজলের ন্যায় এমন সহজে বাহির হইতেছে যে; কৃষ্ণকে তাহার অর্থ বুঝিতে কষ্ট পাইতে হয় নাই, আর মাতঙ্গ, ব্রততী, পদাশ্রম, রঙ্গরস প্রভৃতি কথা ও উপমার জড়ামড়িতে প্রমীলা হয়তো ক্ষণেকের জন্য ইন্দ্ৰজিৎকে ভাবাইয়া डूलिशाछिलन। Y ইন্দ্ৰজিতের উত্তর সেইরূপ কৃত্রিমতাময়, কৌশল্যময়, ঠিক যেন প্রমীলা খুব এক কথা বলিয়া লইয়াছেন, তাহার তো একটা উপযুক্ত উত্তর দিতে হইবে, এইজন্য কহিতেছেন, বেঁধেছ যে দৃঢ় বঁধে, কে পারে খুলিতে সে বাধে ইত্যাদি সমস্ত মেঘনাদবধ কাব্যে হৃদয়ের উচ্ছা।সময় কথা অতি অল্পই আছে, প্ৰায় সকলগুলিই কৌশলময়। তৃতীয় সর্গে যখন প্রমীলা রামচন্দ্রের ফটক ভেদ করিয়া ইন্দ্ৰজিতের নিকট আইলেন তখন ইন্দ্ৰজিৎ কহিলেন, রক্তবীজে বধি তুমি এবে বিধুমুখী, আইলা কৈলাস ধামে ইত্যাদি ও পদ-প্রাসাদে, নাথ, ভববিজয়িনী দাসী, কিন্তু মনমথে না পারি জিনিতে। (দুরূহ) ডরাই সদা; ইত্যাদি যেন স্ত্রী-পুরুষে ছড়া-কাটাকাটি চলিতেছে। পঞ্চম সর্গের শেষভাগে পুনরায় ইন্দ্ৰজিতের অবতারণা করা হইয়াছে। কুসুমাশয়নে যথা সুবৰ্ণ মন্দিরে, বিরাজে রাজেন্দ্ৰ বলী ইন্দ্ৰজিৎ, তথা পশিল কুজন ধ্বনি সে সুখ সদনে। জাগিলা বীর কুঞ্জর কুঞ্জবন গীতে। প্ৰমীলার করপদ্ম করপদ্মে ধরি রথীন্দ্ৰ, মধুর স্বরে, হায় রে, যেমতি নলিনীর কানে অলি কহে গুঞ্জরিয়া প্রেমের রহস্য কথা, কহিলা (আদরে চুম্বি নিমীলিত আঁখি) ডাকিছে কৃজনে, হৈমবতী উষা তুমি, রূপসি, তোমারে পাখিকুল! মিল প্রিয়ে, কমললোচন। সম এ পরান কান্তা, তুমি রবিচ্ছবিতেজোহীন আমি তুমি মুদিলে নয়ন। ভাগ্যবৃক্ষে ফলোত্তম তুমি হে জগতে আমার! নয়নতারা! মহার্ঘরতন। প্রমীলা কহিলেন,