পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৬৭১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাময়িক সাহিত্য সমালোচনা ७8७ নব্যভারত। পৌষ ১২৯৮] শ্রদ্ধাস্পদ শ্ৰীযুক্ত রমেশচন্দ্র দত্ত মহাশয় এই সংখ্যায় হিন্দু আৰ্যদিগের প্রাচীন ইতিহাস’ প্ৰবন্ধে প্রাচীন হিন্দুদিগের সামাজিক ও গাৰ্হস্থ্য জীবন বর্ণনা করিয়াছেন। কথায় কথায় তুমুল তর্কবিতর্কের ঝড় না। তুলিয়া এবং মাকড়সার জালের মতো চতুর্দিকে ইংরাজি বাংলা নোটের দ্বারা মূল কথাটাকে আচ্ছন্ন ও লুপ্তপ্রায় না করিয়া তিনি প্রাচীন ইতিহাসকে ধারাবাহিক চিত্রের ন্যায় পাঠকের সম্মুখে সুন্দরােরাপে পরিস্ফুট করিয়া তুলিতেছেন এজন্য আমরা লেখকের নিকট কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করিতেছি। অজীর্ণ অন্নকে জীৰ্ণ অল্পের অপেক্ষা অধিক গুরুভার বলিয়া অনুভব হয়, সেই কারণে রমেশবাবুর এই ঐতিহাসিক প্রবন্ধ অনেক পাঠকের নিকট তেমন গুরুতর বলিয়া প্ৰতিভাত হইবে না; তাঁহারা মনে করবেন ইহাতে যথেষ্ট ‘গবেষণা’ প্ৰকাশ হয় নাই; পড়িতে নিতান্ত সহজ হইয়াছে। বিপর্যয় পণ্ডিত্য এবং ঐতিহাসিক ব্যায়াম-নৈপুণ্য আমরা বিস্তুর দেখিয়ছি। তর্কের ধুলায় অস্পষ্ট প্রাচীন জগৎ উত্তরোত্তর অস্পষ্টতর হইয়া উঠিতেছে; রমেশবাবু নিজের পণ্ডিত্য আড়ালে রাখিয়া আলোচ্য বিষয়টিকেই যে প্রকাশমান করিয়া তুলিয়াছেন, ইহাতে আমরা বড়ো আনন্দ লাভ করিয়াছি। লতাগুল্মসমাকীর্ণ অন্ধকার অরণ্যপথ ছাড়িয়া সহসা যেন একেবারে রাজপথে আসিয়া পড়িয়াছি। সাহিত্য। পৌষ ১২৯৮] পূর্ব মাস হইতে সাহিত্যে ‘রায় মহাশয়’ নামক এক উপন্যাস বাহির হইতেছে। গল্পটি শেষ হইলে কোনো মত দেওয়া যায় না। এই পর্যন্ত বলিতে পারি ভাষাটি পরিষ্কার এবং সরস, ও পল্লিগ্রামের জমিদারি সেরেস্তার বর্ণনা অতিশয় যথাযথারূপে চিত্রিত হইতেছে। মাননীয়া শ্ৰীমতী কৃষ্ণভাবিনী দাস অশিক্ষিতা ও দরিদ্রা নারী” নামক প্রবন্ধে স্ত্রীজাতি, যে, ‘সকল দেশে ও সকল অবস্থাতেই একরূপ কোমল প্রেমে ভূবিত, একরূপ সহিষ্ণুতায় মণ্ডিত ও একপ্রকার দৃঢ়তায় আবৃত। তাঁহাই প্রমাণ করিয়াছেন, এবং বলিয়াছেন ‘এ জগতে যদি তাহদের সেই কোমলতা, সহিষ্ণুতা ও দৃঢ়তার অপব্যবহার না হইত, তাহা হইলে, আজ আর নারীজাতির শ্রেষ্ঠতার বিষয়ে তর্কবিতর্কের কিছুমাত্র আবশ্যক রহিত না।’ এখনো কোনো আবশ্যক দেখি না। যাহা সত্য তাহা স্বতই সত্য, তৰ্কবিতর্কের সাহায্যকশতই সত্য নহে। নিকৃষ্টতা কখনোই শ্রেষ্ঠতাকে পরাভূত করিয়া রাখিতে পারে না। অতএব শ্রেষ্ঠতা। আপনিই প্ৰতিপন্ন হইবে। কেহ যদি বা মুখে তাহাকে অস্বীকার করে তাহাতে তাহার কোনো ক্ষতিবৃদ্ধি নাই, কারণ, কার্ষে তাহার গীেরব স্বীকার করিতেই হইবে। কিন্তু আজকাল কোনো কোনো নারীলেখক এই প্ৰমাণকার্যে এতই প্ৰাণপণে লাগিয়াছেন যে, মনে হয়, এ বিষয়ে যেন তাহদের নিজেরই মনে কথঞ্চিৎ সংশয় আছে। আমার বোধহয় স্বশ্রেণীর শ্ৰেষ্ঠতা সম্বন্ধে অতিমাত্র সচেতন না হইয়ানিরাভিমান ও সহজভাবে আত্মকর্তব্য সম্পন্ন করিয়া যাওয়ার মধ্যে একটি সুন্দর শ্ৰেষ্ঠতা আছে, আজকাল নারীগণ সেই শ্রেষ্ঠতা হইতে বিচ্যুত হইবার আয়োজন করিতেছেন। আর-একটি কথা আছে, যে রমণীগণ আপনাদের শ্রেষ্ঠত্ব উপলব্ধি করিতেছেন তাহদের এইটি স্মরণ রাখা উচিত যে, যুগযুগান্তর হইতে যে কৰ্তব্যপথ DDDDB DTDD DDDDB DDB BB DLLL BBD DBDBS LB KK DBDB DBB LLeBDBS S কীরূপ অবস্থা ঘটিবে কলা কঠিন। নায়ী নায়ী বলিয়াই শ্ৰেষ্ঠ, তিনি পুরুষের কার্থে হস্তক্ষেপ করিলে যে শ্রেষ্ঠতর হইবেন তাহা নহে বরং বিপরীত ঘটিতে পারে; তাহাতে তাহদের চরিত্রের কোমলতা, সহিষ্ণুতা ও দৃঢ়তার সামঞ্জস্য নষ্ট হওয়া আশ্চর্য নহে- বর্তমান সংখ্যায় সাহিত্যসম্পাদক মহাশয় সাধনার সমালোচনা প্ৰকাশ করিয়া আমাদিগকে সবিশেষ উৎসাহিত করিয়াছেন সাহিত্য ও বিজ্ঞান। কীর্তিক (১২৯৮ এই নামে এক নূতন মাসিক পত্র বাহির হইতেছে। বর্তমান সংখ্যায় শ্ৰীযুক্ত সখারাম গণেশ