পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রবীন্দ্ৰ-রচনাবলী ܥܕܟ তাহাদের সদ্যমৃত দেহ স্ত্রীর নিকট উপহারস্বরূপ পাঠাইয়া দিল। ·, মা কেবল একবার আর্তস্বরে চিৎকার করিয়া আর মাথা তুলিল না, দুই-চারি দিনেই দুঃখের এইরূপ অমানুবিক ঘটনা জাতীয় চরিত্রসূচক দৃষ্টান্তরাপে উল্লেখ করা লেখিকার পক্ষে ন্যায়সংগত হইয়াছে বলিতে পারি না। কিন্তু ইহা নিশ্চয় যে, একীকরণের মাহাত্ম্য সম্বন্ধে যিনিই যত বড়ো বড়ো কথা বলুন, মানুষের প্রতি মানুষের অধিকারের একটা সীমা আছে; পৃথিবীর প্রাচ্য প্রদেশের স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অধিকার সেই সীমা এতদূর অতিক্রম করিয়াছে যে, আধ্যাত্মিকতার দোহাই দিয়া কতকগুলা আগড়ম বাগড়ম বকিয়া আমাদিগকে কেবল কথার ছলে লজ্জা নিবারণ করিতে হইতেছে। Mv প্ৰাচ্য সভ্যতার প্রাচীনত্ব মে মাসের পত্রিকায় আচাৰ্য ম্যাক্সমুলার লিখিতেছেন প্রাচীনতার একটি বিশেষ গৌরব আছে সন্দেহ নাই। কিন্তু প্ৰাচ্যতত্ত্ব আলোচনায় সেইটোকেই মুখ্য আকর্ষণ জ্ঞান করা উচিত হয় না। যােহাকিছু বহুকেলে এবং সৃষ্টিছাড়া তাহাই যে বিশেষ আদরের সামগ্ৰী তাহা নহে। বরঞ্চ প্রাচীনের সঙ্গে যখন নবীনের যোগ দেখা যায়, যখন সম্পর্কসূত্রে নবীন প্রাচীন হইয়া যায় এবং প্রাচীন নবীন হইয়া আসে, তখনই আমাদের যথার্থ আনন্দ বোধ হয়। আৰ্য সভ্যতা আবিষ্কারের প্রধান মাহাত্ম্য এই যে, ইহার দ্বারা দূর নিকটবতী হইয়াছে এবং যাহাদিগকে পর মনে করিতাম তাহাদিগকে আপনার বলিয়া জানিয়াছি। মনুষ্যপ্ৰেম বিস্তারের, পৃথিবীর দেশ-বিদেশের মধ্যে সম্বন্ধ স্থাপনের একটি প্রাচীন পথ পাওয়া গিয়াছে। অতএব এ কেবল একটি শুষ্ক তত্ত্বমাত্র নহে, মনুষ্যত্বই ইহার আত্মা, মানব্বই ইহার লক্ষ্যস্থল। তিনি বলিতেছেন একবার ভাবিয়া দেখো ইন্ডো-য়ুরোপিয়ান’ শব্দটার মধ্যে কতটা মহত্ত্ব আছে। এই নামে ইংরাজি, জার্মান, কেপ্টিক, স্নাভোনিক, গ্ৰীক এবং লাটিন -ভাষীদের সহিত সংস্কৃত, পারসিক এবং আর্মানি -ভাষীরা এক হইয়া গিয়াছে। এই নামে এমন একটি বৃহৎ মিলনমণ্ডলীর সৃষ্টি হইয়াছে পৃথিবীর সমস্ত মহত্তম জাতি যাহার অঙ্গ- এই নামের প্রভাবে সেই সমস্ত জাতি আপনাদের অন্তরের মধ্যে বৃহৎ ইন্ডো-যুরোপীয় ঐক্যের, প্রাচীন আৰ্য ভ্ৰাতৃত্ববন্ধনের একটি মহৎ মৰ্যাদা অনুভব করিতে পারিতেছে। ম্যাক্সমুলার মহাত্মার মতো কথা বলিয়াছেন। হায়, তিনি জানেন না। তাহার প্রতিষ্ঠিত এই ‘আৰ্য' শব্দ লইয়াই আমাদের দেশে দূরে নিকটে, মানবে মানবে কাল্পনিক ব্যবধান স্থাপিত হইতেছে। বাঙালি পণ্ডিতের মুখে যখন এই “আৰ্য' নাম উচ্চারিত হয় তখন তাহার সুদূরব্যাপী উদারতা ঘুচিয়া গিয়া তাহা একটা গ্ৰাম্য দলাদলির কলহকোলাহলে পরিণত হয়। নামের দোষ নাই, যাহার যেমন প্রকৃতি, ভাষা তাহার মুখে তেমনি আকার ধারণ করে। এই উপলক্ষে শ্রদ্ধাস্পদ শ্ৰীযুক্ত দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর মহাশয়ের রচিত ‘আর্যামি এবং • te25;Rel Y Siebr ক্ষিপ্ত রমণীসম্প্রদায় যে-সকল ইংরাজ স্ত্রীলোক রাজনৈতিক অধিকার লাভ করিয়া পুরুষের সমকক্ষ হইবার_চেষ্টা করিতেছেন তাহদের সম্বন্ধে বিলাতের বিখ্যাত লেখিকা লিনা লিস্টন জুলাই মাসের নাইটিছ