পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৭২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

· ዓሊርOO ब्रदीक्ष-स5नविकी পুলিসের ব্যয়ভার স্থাপন করা হয় তখন বস্তুত কাহাকেও বিশেষ করিয়া দোষী করা হয় না। ইহাতে কেবল স্থানীয় লোকের পরে শক্তির ট্যাক্স বসানো হয় মাত্র। পরন্তু নূতন নিয়মে ব্যক্তিবিশেষদের প্রতি বিনা বিচারে অপরাধের কলঙ্ক এবং দণ্ড আরোপ করিবার ক্ষমতা কর্তৃপুরুষদের থাকিবে অথচ সে কলঙ্ক ক্ষালন করিবার কোনো উপায় দণ্ডিত ব্যক্তিদিগকে দেওয়া হইবে না। বিচার হইবে না। অথচ দোষী সাব্যস্ত হইবে। যদি এ কথা বলা যায় যে, আইনমতে বিচার করিতে গেলে অনেক সময় প্রকৃত দোষী ধরা পড়ে না, অতএব কর্তৃপক্ষীয়দিগকে সকল সময়েই আইনের দ্বারা বাধ্য করা নহে, তবে জিজ্ঞাস্য এই শাসনপ্রণালীর মধ্যে এই ছিদ্ৰকে একবার স্থান দিলে কোথায় ইহার সীমা নির্ণয় হইবে ? বিচারকেরা যে মনুষ্যস্বভাবের দুর্বলতাবশত পক্ষপাত করিতে পারেন সে-সকল কথা আমরা দূরে রাখিতেছি— স্থূল কথা এই যে, আবশ্যক বুঝিয়া ট্যাক্স বসাইতে গবর্নমেন্টের অধিকার আছে; কিন্তু বিনা বিচারে দোষী করিতে এবং কোনো ব্যক্তিকে আপনি দোষীক্ষালনের অধিকার না দিতে গবর্নমেন্টের ন্যায্য অধিকার নাই। ম্যাজিষ্ট্রেট যদি স্থানীয় অভিজ্ঞতাবশত সর্বজ্ঞা হইয়া থাকেন,তবে শান্তিভঙ্গের আয়োজন জন্য চেষ্টা কোন অন্য অপরাধেরও আন্দাজমতো খেয়ালমতো বিচারের ভার তাহার উপর দেওয়া উচিত। ভারতবষীয় প্রকৃতি জার্মান অধ্যাপক ওলডেনবাৰ্গ বুদ্ধের যে জীবনচরিত লিখিয়াছেন, তাহা ইংরাজিতে অনুবাদিত হইয়াছে এবং সেই সূত্রে তাহার বাঙালি পাঠকদিগের নিকট পরিচিতি হইয়াছে। সম্প্রতি তিনি জর্মন ভাষায় বেদের ধর্ম নামক এক গ্রন্থ প্রকাশ করিয়াছেন, আমরা তাহার অনুবাদের প্রতীক্ষা করিয়া আছি। মনিস্ট নামক আমেরিকান পত্রিকায় সমালোচনাস্থলে এই গ্রন্থের কিয়দংশ উদধূত হইয়াছে, নিম্নে তাহা সংকলন করিয়া দিলাম। আধুনিক হিন্দুগণ আপনাদের শাস্তিপ্রিয় নিৰ্দ্ধন্দ্ব প্রকৃতিকে শ্রেষ্ঠতার লক্ষণ বলিয়া গর্ব করে, কিন্তু অধ্যাপক বলেন ইহা তাহাদের দুর্বলতার লক্ষণ। যে-সকল মহা দ্বন্দ্ব-সংঘর্ষে যুরোপীয় জাতি বলিষ্ঠ পৌরুষ লাভ করিয়াছেন- ইরানীদের সহিত বিচ্ছেদের পর ভারতবর্ষে প্রবেশ করিয়া অবধি ভারতবাসী আর্যগণ সেই- সকল প্ৰবল দ্বন্দ্ব হইতে বঞ্চিত হইয়া ক্রমশই শিথিলবল হইয়াছেন। এই ফলশস্যশালী নূতন নিবাসের নিস্তব্ধতার মধ্যে কৃষ্ণবৰ্ণ আদিম অসভ্য জাতির সহিত একত্র অবস্থান করিয়া তাঁহাদের হিন্দুত্ব ক্রমশই প্রস্ফুটিত হইয়া উঠিয়াছিল। একে তো শীত দেশ হইতে আসিয়া এখানকার আবহাওয়ায় তাহদের অনেকটা নিস্তেজ করিয়াছিল, তাহার পরে অসমকক্ষ অসভ্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের সহিত সহজ সংগ্রামে জয়লাভপূর্বক উর্বরা বসুন্ধরা নির্বাধে ভোগ করিয়া তাঁহাদের চরিত্রে পুরুষোচিত কঠিন্যের অভাব জন্মিতে লাগিল। তঁহাদের জ্ঞানবিজ্ঞানচর্চার মধ্যে সেই কঠিন প্ৰয়াসের সুকঠোর সংঘাত ছিল না, যদ্দ্বারা বাস্তব জগতের গভীরতা ভেদ করিয়া সফলকাম হইয়া চিন্তারাজ্যের ভূমানন্দলোকে উত্তীর্ণ হওয়া যায়। অতি অনায়াসেই তাহারা বস্তুজগতের উপরিতলে সত্যের সহিত কল্পনা, সুন্দরের সহিত অদ্ভুত, বিবিধ ওলডেনবর্গের মত উদধূত করিয়া সমালোচক তাহার হিন্দু বন্ধুবৰ্গকে সম্বোধনপূর্বক বলিয়াছেন উপরি-উক্ত কথাগুলি চিন্তা করিয়া নিজেদের প্রকৃত অবস্থা অনুধাবন করিয়া দেখিলে আত্মোন্নতি সাধনের যথার্থ উপায় নির্ণয় হইতে পারে। তিনি বলেন, যে-সকল প্রাকৃতিক অবস্থাবশত হিন্দুরা অবসর এবং স্বচ্ছলতা লাভ করিয়াছিলেন সেই সকল অবস্থা গতিকেই হাদের অনুষ্ঠান এবং চিন্তাপ্ৰণালী এমন কৃত্রিমতা প্রাপ্ত হইয়াছে, তাহাদের বুদ্ধি স্বেচ্ছাচারিণী