পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তদশ খণ্ড) - সুলভ বিশ্বভারতী.pdf/৮২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ԳՏՀ शीश-ब्राष्मावड़ी দেশের ‘বাপু বাছা' শব্দ Please, thank you প্রভৃতি শব্দ অপেক্ষা হৃদয়ের গভীরতর প্রদেশ হইতে বাহির হয়; এবং সাধারণত এইরূপ দেখা যায় যে, ছেলেদের উপর পিতার কটু-কাটব্য করিবার যতটুকু অধিকার তাহার সীমা লঙ্ঘন করিয়া ভৃত্যদের প্রতি কটুক্তি করা আমাদের দেশের প্রকৃতি-বিরুদ্ধ; তবে- শহর অঞ্চলের প্রকৃতিকে সাধারণত আমাদের দেশের প্রকৃতি বলিয়া গণ্য করিলে আমরা নিরুত্তর। ভক্তি এবং অনুরাগ সম্বন্ধে লেখক যাহা বলিয়াছেন তাহাও আমাদের সংগত বোধ হয় না। পূজ্যের প্রতি অনুরাগকেই ভক্তি কহে-সমানের প্রতি অনুরাগকেই প্রেম কহে- শাসন-ভয়কে তো আর ভক্তি বলে না। মনুষ্যের স্থায়ী উন্নতি-স্পাহাও আছে এবং ক্ষণিক আমোদ-সম্পূহও আছে, উন্নত লোকদিগের প্রতি ভক্তিও স্বাভাবিক, সমানে সমানে প্রেমও স্বাভাবিক। নেপোলিয়নের প্রতি সৈন্যদের কেমন অনুরাগ ছিল- সে অনুরাগ একরূপ, আর বয়স্যে বয়স্যে অনুরাগ একরূপ; প্রথম প্রকারের অনুরাগের নামই ভক্তি, দ্বিতীয় প্রকার অনুরাগের নামই প্রণয়; ভক্তি-প্ৰকাশ করা যেমন করিয়াই হউক-না-কেন তাহাতে কিছু আইসে যায় না, কিছু না করিয়া ভক্তি প্ৰকাশ করা হােক, সেলাম করিয়া ভক্তি প্ৰকাশ করা হোক, প্ৰণাম করিয়া ভক্তি প্ৰকাশ করা হোক, যাহাঁই হউক-না-কেন ভক্তির পাত্রে ভক্তি ভিন্ন নীচু শ্রেণীর অনুরাগ শোভা পায় না; মনে করো ব্যাসদেব আসিয়া তোমার সম্মুখে আবির্ভূত হইয়াছেন, তাহার সহিত শেকহ্যান্ড করিবার জন্য হাত বাড়াইয়া দিতে তোমার কি মনে একটুও কিন্তু হইবে না? একত্রবাসী ঘরের লোকদের মধ্যে কিছু না করিয়াও ভক্তিই বলো, আর প্রণয়ই বলো ব্যক্ত করা হইয়া থাকে; পুত্রেরা পিতাকে প্ৰণাম না। করিয়াও ভক্তি প্ৰদৰ্শন করে, ভ্ৰাতারা পরস্পর আলিঙ্গন না করিয়াও সৌহার্দ্য বিস্তার করে। ঈশ্বরের প্রতি ভক্তি অপেক্ষা প্রেমের মূল্য অধিক বলিয়া যদি মানা যায়। তবে তাহার একটি বিশেষ কারণ আছে- সে কারণ অন্য কোথাও খাটে না, সে কারণ এই যে, তিনি যেমন দূর হইতে দূরতম তেমনি নিকট হইতে নিকটতম- যেমন বৃহৎ হইতে বৃহৎ তেমনি অণু হইতে অণু; কিন্তু । সংসারে যে বড়ো সে বড়ো, যে ছোটো সে ছোটো- বড়ো-ছোটোর মধ্যে এইরূপ প্রাচীরের আড়াল রহিয়াছে; তাহা যদি না থাকে। তবে সংসারের বৈচিত্র্য রক্ষা হইতে পারে না। লেখক বলিয়াছেন, “এইজন্য সকল শাস্ত্রেই লিখিয়াছে যে, গুরুজনের অবাধ্য হওয়া পাপকোনো শাস্ত্ৰেই লেখে নাই, কনিষ্ঠদের প্রতি যথেচ্ছা ব্যবহার করা পাপ।” এ কথাটি ঠিক নয়। মনু বলিয়াছেন, “গুরোরপাবলিপ্তস্য কার্যাকাৰ্যমজানতঃ । উৎপথ প্ৰতিপন্নস্য ন্যাযাং ভবতি শাসনং।।" শুরু। যদি গর্বিত কার্যকাৰ্য-জ্ঞানশূন্য ও বিপথগামী হন। তঁহাকেও শাসন করা উচিত। এখনও লোকপ্ৰবাদ আছে যে, “দোষাবাচ্য গুরোরপি।” ৫. জুতা-ব্যবস্থা” প্ৰবন্ধটির শিরোনামের নীচে কৌতুক করিয়া মুদ্রিত হয়, '(১৮৯০ খৃস্টাব্দে লিখিত।)’ অর্থাৎ আরও দশ বৎসর পরে বাঙালি জাতির কীরূপ অবস্থা হইবে তাহারই কাল্পনিক চিত্র ইহাতে অঙ্কিত হইয়াছে। প্ৰবন্ধটির শেষে সম্পাদকীয় পাদটীকায় লিখিত 2- "This evening's Englishman has discovered the secret of correctly treating the people of Bengal. It says "Kick them first and then speak to them” ” — Indian Mirror. C. J. BrifèGF GGR fRUPTET TF?FER TRYÒD INCR5 এরাপ জুতা মারিতে সাহস করে, সে জাতি উপরি-প্রকাশিত প্ৰবন্ধ পড়িয়া বিস্মিত হইবে না। বোধ হয়, লেখক রহস্যচ্ছলে প্ৰবন্ধটি লিখিয়াছেন, কিন্তু উহা সত্যের এত কাছ ঘোঁসিয়া গিয়াছে যে বাঙালি জাতির পক্ষে উহ্য রহস্যাত্মক হইবে না। আজ অন্য কোনো দেশে যদি কোনো কাগজ ওইরাপ অপমানের আভাস মাত্র দিত, তাহা হইলে দেশবাসীরা তৎক্ষণাৎ নানা উপায়ে তাহার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার আয়োজন করিত। কিন্তু এত দিন হইতে আমরা জুতা হজম করিয়া আসিতেছি যে, আজ উহা আমাদের নিকট গুরু পাক বলিয়া ঠেকিতেছে না- সং” মন্তব্যটি Englishmam, পত্রিকায় প্রকাশিত হয় 30 April 1881,