পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

〉、br রবীন্দ্র-রচনাবলী কত কথা কহিল, কত কথা বাধিয়া গেল, কোনো কথাই ভালো করিয়া বুঝাইয়। বলিতে পারিল না। মোহিনী শশব্যন্তে কহিল, ”সরিয়া যান, আমি জল লইয়া যাইতেছি।” সেইদিন মহেন্দ্র বাড়ি গিয়াই একটা কী সামান্য কথা লইয়া পিতার সহিত ঝগড়া করিল, নির্দোষী রজনীকে অকারণ অনেকক্ষণ ধরিয়া তিরস্কার করিল, শম্ভু চাকরটাকে দুই-তিন বার মারিতে উষ্ঠত হইল ও মদের মাত্রা আরো খানিকট বাড়াইল। কিছু দিনের মধ্যে গদাধরের সহিত মহেঞ্জের আলাপ হইল, তাহার দিন চারেক পরে স্বরূপবাবুর সহিত সখ্যতা জন্মিল, তাহার সপ্তাহ খানেক পরে নরেন্ত্রের সহিত পরিচয় হইল ও মাসেকের মধ্যে মহেন্দ্র নরেন্দ্রের সভায় সন্ধ্যাগমে নিত্য অতিথিরূপে হাজির ठ्ड्रेट ७ जोश्लिल । চতুর্থ পরিচ্ছেদ পণ্ডিতমহাশয়ের দ্বিতীয় পক্ষের বিবাহ পূর্বে রঘুনাথ সার্বভৌম মহাশয়ের একটি টোল ছিল। অর্থাভাবে অল্প দিনেই টোলটি উঠিয়া যায়। গ্রামের বর্ধিষ্ণু জমিদার অনৃপকুমার যে পাঠশালা স্থাপন করেন, অল্প বেতনে তিনি তাহার গুরুমহাশয়ের পদে নিযুক্ত হন কিন্তু গুরুমহাশয়ের পদে আসীন হইয়া তাহার শাস্তপ্রকৃতির কিছুমাত্র বৈলক্ষণ্য হয় নাই। পণ্ডিতমহাশয় বলিতেন, তাহার বয়স সবে চল্লিশ বৎসর। এই প্রমাণের উপর নির্ভর করিয়া শপথ করিয়া বলা যায় তাহার বয়স আটচল্লিশ বৎসরের নূ্যন নয়। সাধারণ পণ্ডিতদের সহিত র্তাহার আর কোনো বিষয় মিল ছিল না— তিনি খুৰ টস্টসে রসিক পুরুষ ছিলেন না বা খটখটে ঘট-পট-বাগীশ ছিলেন না, দলাদলির চক্রান্ত করিতেন না, শাস্ত্রের বিচার লইয়া বিবাদে লিপ্ত থাকিতেন না, বিদায়-জাদায়ের কোনো আশাই রাখিতেন না। কেবল মিল ছিল প্রশস্ত উদরটিতে, মস্তের ডিবাটিতে, ক্ষুত্র টিকিটিতে ও শ্মশ্রবিহীন মুখে। পাঠশালার বালকের প্রায় চব্বিশ ঘণ্টা তাহার বাড়িতেই পড়িয়া থাকিত। এই বালকদের জন্ত র্তাহার অনেক সন্দেশ খরচ হইত ; সন্দেশের লোভ পাইয়া বালকের ছিনা জোকের মতো তাহার বাড়ির মাটি কামড়াইয়া পড়িয়া থাকিত। পণ্ডিতমশাই বড়োই ভালোমানুষ ছিলেন এবং দুই বালকের তাহার উপর বড়োই অত্যাচার করিষ্ঠ। পণ্ডিতমহাশয়ের নিয়াটি এমন অভ্যন্ত ছিল