পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२9रै রবীন্দ্র-রচনাবলী আঘাত দিবার ষে জাম্বাত তাহাও আমি সহ করিয়াছি। আমি অপ্রিয়তাকে কৌশলে এড়াইয়া চলিবার চেষ্টা করি নাই । এইজন্তই আজ আপনাদের নিকট হইতে ষে সমাদর লাভ করিলাম তাহাকে এমন দুর্লভ বলিয়া শিরোধার্য করিয়া লইতেছি। ইহা স্তুতিবাক্যের মূল্য নহে, ইহা প্রতিরই উপহার। ইহাতে যে ব্যক্তি মান পায় সেও সম্মানিত হয়, আর যিনি মান দেন তাহারও সন্মানবুদ্ধি হয়। যে সমাজে মানুষ নিজের সত্য আদর্শকে বজায় রাখিয়া নিজের সত্য মতকে খর্ব না করিয়াও শ্রদ্ধা লাভ করিতে পারে সেই সমাজই যথার্থ শ্রদ্ধাভাজন— যেখানে আদর পাইতে হইলে মাহুষ নিজের সত্য বিকাইয়া দিতে বাধ্য হয় সেখানকার আদর আদরণীয় নহে। কে আমার দলে, কে আমার দলে নয়, সেই বুঝিয়া যেখানে স্তুতি-সন্মানের ভাগ বণ্টন হয় সেখানকার সম্মান অস্পৃশ্য ; সেখানে যদি ঘৃণা করিয়া লোক গায়ে ধুলা দেয় তবে সেই ধুলাই যথার্থ ভূষণ, যদি রাগ করিয়া গালি দেয় তবে সেই গালিই যথার্থ সম্বর্ধনা ৷ সন্মান যেখানে মহৎ, যেখানে সত্য, সেপানে নম্রতায় আপনি মন নত হয় । অতএব আজ আপনাদের কাছ হইতে বিদায় হইবার পূর্বে এ কথা অস্তরের সহিত আপনাদিগকে জানাইয়া যাইতে পারিব যে, আপনাদের প্রদত্ত এই সম্মানের উপহার আমি দেশের আশীর্বাদের মতো মাথায় করিয়া লইলাম— ইহা পবিত্র সামগ্রী, ইহা আমার ভোগের পদার্থ নহে, ইহা আমার চিত্তকে বিশুদ্ধ করিবে ; আমার অহংকারকে আলোড়িত করিয়া তুলিবে না।