পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্যের স্বরূপ २७é একদা ফরাসিবিপ্লবকে ধারা ক্রমে ক্রমে জাগিয়ে নিয়ে এসেছিলেন তারা ছিলেন বৈশ্বমানবিক জাদশের প্রতি বিশ্বাসপরায়ণ । ধর্মই হোক, রাজশক্তিই হোক, যা-কিছু ক্ষমতালুদ্ধ, যা-কিছু ছিল মানুষের মুক্তির অন্তরায়, তারই বিরুদ্ধে ছিল তাদের অভিযান। সেই বিশ্বকল্যাণ-ইচ্ছার আবহাওয়ায় জেগে উঠেছিল যে সাহিত্য সে মহৎ ; সে মুক্তদ্বারসাহিত্য সকল দেশ, সকল কালের মাছুষের জন্য ; সে এনেছিল জালো, এনেছিল আশা। ইতিমধ্যে বিজ্ঞানের সাহায্যে যুরোপের বিষয়বুদ্ধি বৈশ্বযুগের অবতারণা করলে । স্বজাতির ও পরজাতির মর্মস্থল বিদীর্ণ করে ধনস্রোত নানা প্রণালী দিয়ে যুরোপের নবোস্তৃত ধনিকমণ্ডলীর মধ্যে সঞ্চারিত হতে লাগল। বিষয়বুদ্ধি সর্বত্র সর্ব বিভাগেই ভেদবুদ্ধি, তা ঈর্ধাপরায়ণ। স্বার্থসাধনার বাহন যারা তাদেরই ঈর্ষা, তাদেরই ভেজনীতি অনেক দিন থেকেই য়ুরোপের অস্তরে অস্তরে ওমরে উঠছিল ; সেই বৈনাশিক শক্তি হঠাং সকল বাধা বিদীর্ণ করে আগ্নেয় প্রাবে যুরোপকে ভাসিয়ে দিলে। এই যুদ্ধের মূলে ছিল সমাজধ্বংসকারী রিপু, উদার মতুয়ত্বের প্রতি অবিশ্বাস। সেইজন্তে এই যুদ্ধের যে দান তা দানবের দান, তার বিষ কিছুতেই মরতে চায় না, তা শাস্তি জানলে না । তার পর থেকে যুরোপের চিত্ত কঠোরভাবে সংকুচিত হয়ে আসছে— প্রত্যেক দেশই আপন দরজার আগলের সংখ্যা বাড়াতে ব্যাপৃত। পরস্পরের বিরুদ্ধে ৰে সংশয়, বে নিষেধ প্রবল হয়ে উঠছে তার চেয়ে অসভ্যতার লক্ষণ আমি তো আর কিছু দেখি নে। রাষ্ট্ৰতন্ত্রে একদিন আমরা য়ুরোপকে জনসাধারণের মুক্তিসাধনার তপোস্তৃমি বলেই জানতুম– অকস্মাং দেখতে পাই, সমস্ত যাচ্ছে বিপর্যন্ত হয়ে । সেখানে দেশে দেশে জনসাধারণের কণ্ঠে ও হাতে পায়ে শিকল দৃঢ় হয়ে উঠছে ; হিংস্রতায় যাদের কোনো কুষ্ঠানেই তারাই রাষ্ট্রনেতা। এর মূলে আছে ভীরুতা, যে ভীরুতা বিষয়বুদ্ধির। ভয়, পাছে ধনের প্রতিযোগিতায় বাধা পড়ে, পাছে অর্থভাণ্ডারে এমন ছিত্র দেখা দেয় যার মধ্য দিয়ে ক্ষতির ছগই আপন প্রবেশপথ প্রশস্ত করতে পারে। এইজন্তে বড়ো বড়ো শক্তিমান পাহারাওয়ালাদের কাছে দেশের লোক আপন স্বাধীনতা, আপন আত্মসন্মান বিকিয়ে দিতে প্রস্তুত আছে। এমন-কি, স্বজাতির চিরাগত সংস্কৃতিকে খর্ব হতে দেখেও শাসনতন্ত্রের বর্বরতাকে শিরোধার্য করে নিয়েছে। বৈপ্তযুগের এই ভীরুভায় মাছুষের আভিজাত্য নষ্ট করে দেয়, তার ইতরতার লক্ষণ নির্লজভাবে প্রকাশ পেতে থাকে। পণ্যহাটের তীর্থযাত্রী অর্থলুদ্ধ যুরোপ এই-ষে আপন মন্থন্তত্বের খর্বত মাখা ষ্ট্রেট করে স্বীকার করছে, আত্মরক্ষার উপায়রূপে নিৰ্মাণ করছে জাপন কারাগার, এর প্রভাব কি ক্রমে ক্রমে তার সাহিত্যকে অধিকার করছে না। ইংরেজি সাহিত্যে একদা জামরা বিদেশীরা ষে নিঃসংকোচ আমন্ত্ৰণ পেয়েছিলুম জাজ কি’তা জায় আছে। এ কথা বলা