পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/২৮৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সাহিত্যের স্বরূপ "ఆt মধ্যে নিত্যসত্যের প্রামাণিকতা মেলে না। নূতনের বিদ্রোহ অনেক সময় একটা স্পৰ্ণামাত্র। আমি এই বলি, বিজ্ঞানে মানুষের কাছে প্রাকৃতিক সত্য আপন নৃতম নূতন জ্ঞানের ভিত্তি অবারিত করে, কিন্তু মানুষের আনন্দলোক যুগে যুগে আপন সীমানা বিস্তার করতে পারে কিন্তু ভিত্তি বদল করে না । ষে সৌন্দর্য, যে প্রেম, যে মহত্বে মানুষ চিরদিন স্বভাবতই উজবোধিত হয়েছে তার তো বয়সের সীমা নেই ; কোনো আইনস্টাইন এসে তাকে তো অপ্রতিপন্ন করতে পারে না, বলতে পারে না বসন্তের পুষ্পোচ্ছ্বাসে যার অকৃত্ৰিম আনন্দ সে সেকেলে ফিলিস্টাইন’। যদি কোনো বিশেষ যুগের মানুষ এমন স্বষ্টিছাড়া কথা বলতে পারে, যদি সুন্দরকে বিদ্রুপ করতে তার ওষ্ঠাধর কুটিল হয়ে ওঠে, যদি পূজনীয়কে অপমানিত করতে তার উৎসাহ উগ্র হতে থাকে, তা হলে বলতেই হবে, এই মনোভাব চিরন্তন মানবস্বভাবের বিরুদ্ধ। সাহিত্য সর্ব দেশে এই কথাই প্রমাণ করে আসছে যে, মানুষের আনন্দনিকেতন চিরপুরাতন। কালিদাসের মেঘদূতে মানুষ আপন চিরপুরাতন বিরহ-বেদনারই স্বাদ পেয়ে আনন্দিত। সেই চিরপুরাতনের চিরনূতনত্ব বহন করছে মানুষের সাহিত্য, মানুষের শিল্পকলা । এইজন্যেই মানুষের সাহিত্য, মানুষের শিল্পকলা সর্বমানবের । তাই বারে বারে এই কথা আমার মনে হয়েছে, বর্তমান ইংরেজি কাব্য উদ্ধতভাবে নৃতন, পুরাতনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহী-ভাবে নৃতন। ষে তরুণের মন কালাপাহাড়ি সে এর নব্যতার মদির রসে মত্ত, কিন্তু এই নব্যতাই এর ক্ষণিকতার লক্ষণ । ষে নবীনতাকে অভ্যর্থনা করে বলতে পারি নে— জনম অবধি হম রূপ নেহারস্থ নয়ন ন তিরপিত ভেল, লাখ লাখ যুগ হিয়ে হিয়ে রাখন্থ তৰু হিয়া জুড়ন ন গেল— তাকে যেন সত্যই নৃতন ব'লে ভ্রম না করি, সে আপন সদ্যজন্মমুহূর্তেই আপন জয় সঙ্গে নিয়েই এসেছে, তার আয়ু:স্থানে ষে শনি সে যত উজ্জলই হোক তৰু সে শনিই বটে । נ8סוג fs):