পাতা:রবীন্দ্র-রচনাবলী (সপ্তবিংশ খণ্ড) - বিশ্বভারতী.pdf/৩৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

विश्वछांब्रडौ \లిటీ:) আমি যখন বিশ্বভারতী স্থাপিত করলুম তখন এই সংকল্পই জামার মনে কাজ করছিল। আমি বাঙালি বলে আমাদের সাহিত্যরসের চর্চা কেবল বাংলাসাহিত্যের মধ্যেই পরিসমাপ্ত হবে ? আমি কি বিশ্বসংসারে জন্মাই নি। আমারই জন্য জগতের স্বত দার্শনিক যত কবি স্বত বৈজ্ঞানিক তপস্যা করছেন, এর যথার্থোপলব্ধির মধ্যে কি কম গৌরব আছে ? আমার মুখে এই কথা অহমিকার মতো শোনাতে পারে। আজকের কথাপ্রসঙ্গে তৰু আমার বলা দরকার যে, যুরোপে আমি ষে সন্মান পেয়েছি তা রাজামহারাজার কোনো কালে পায় নি। এর দ্বারা একটা কথার প্রমাণ হচ্ছে যে, মানুষের অন্তরপ্রদেশের বেদনা-নিকেতনে জাতিবিচার নেই। আমি এমন-সব লোকের কাছে গিয়েছি যারা মানুষের গুরু, কিন্তু তারা স্বচ্ছন্সে নি:সংকোচে এই পূৰ্বদেশবাসীর সঙ্গে শ্রদ্ধার আদানপ্রদান করেছেন। আমি কোথায় যে মানুষের মনে সোনার কাঠ ছোয়াতে পেরেছি, কেন যে য়ুরোপের মহাদেশ-বিভাগে এরা আমাকে আত্মীয়রূপে সমাদর করেছে, সে কথা ভেবে আমি নিজেই বিস্মিত হই। এমনি ভাবেই স্তর জগদীশ বস্থও যেখানে নিজের মধ্যে সত্যের উৎসধারার সন্ধান পেয়েছেন এবং তা মানুষকে জিতে পেরেছেন সেখানে সকল দেশের জ্ঞানীরা তাকে আপনার বলেই অভ্যর্থনা করে নিয়েছেন। পাশ্চাত্য ভূখণ্ডে নিরস্তর বিদ্যার সমাদর হচ্ছে। ফরাসি ও জর্মনদের মধ্যে বাইরের ঘোর রাষ্ট্রনৈতিক যুদ্ধ বাধলেও উভয়ের মধ্যে বিদ্যার সহযোগিতার বাধা কখনো ঘটে নি। আমরাই কেন শুধু চিরকেলে স্কুলবয়' হয়ে একটু একটু করে মুখস্থ করে পাঠ শিখে নিয়ে পরীক্ষার আসরে নামব, তার পর পরীক্ষাপাস করেই সব বিস্মৃতির গর্তে ডুবিয়ে বসে থাকব। কেন সকল দেশের তাপসদের সঙ্গে আমাদের তপস্তার বিনিময় হবে না। এই কথা মনে রেখেই অামি বিশ্বভারতীতে আমাদের সাধনার ক্ষেত্রে যুরোপের অনেক মনস্বী ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ করেছিলুম। তার একজনও সেই আমন্ত্রণের অবজ্ঞা করেন নি। তাদের মধ্যে একজনের সঙ্গে অন্তত আমাদের চাক্ষুষ পরিচয়ও হয়েছে। তিনি হচ্ছেন প্রাচ্যতত্ত্ববিদ ফরাসি পণ্ডিত সিলভ্য লেভি। তার সঙ্গে যদি আপনাদের নিকটসম্বন্ধ ঘটত তা হলে দেখতেন যে, তার পাণ্ডিত্য যেমন অগাধ তার হৃদয় তেমনি বিশাল। আমি প্রথমে সংকোচের সঙ্গে অধ্যাপক লেডির কাছে গিয়ে আমার প্রস্তাব জানালুম। তাকে বললুম যে আমার ইচ্ছা যে, ভারতবর্ষে আমি এমন বিদ্যাক্ষেত্র স্থাপন করি যেখানে সকল পণ্ডিতের সমাগম হবে, যেখানে ভারতীয় সম্পদের একত্র-সমাবেশের চেষ্টা হবে। সে সময় তার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বক্তৃতা দেবার